রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল বা চুল্লি স্থাপন করা হচ্ছে আজ। পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালুর বা কমিশনিং প্রক্রিয়ায় এ চুল্লি স্থাপন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। পরমাণু বিজ্ঞানীরা এ চুল্লিকে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের হার্ট বা হৃৎপিণ্ড বলে থাকেন। এর মাধ্যমে বাঙালি নিউক্লিয়ার জাতি হিসাবে বিশ্বে পরিচিত হবে। এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি দেশে পরিচ্ছন্ন জ্বালানির (ক্লিন এনার্জি) মডেল হিসাবে বিবেচিত হবে, যা থেকে দীর্ঘ মেয়াদে পাওয়া যাবে সাশ্রয়ী, নির্ভরযোগ্য ও মানসম্মত বিদ্যুৎ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন। আজ রোববার সকাল ১১ টায় প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে চুল্লি স্থাপনের কাজ উদ্বোধন করবেন। এর মাধ্যমে দেশে পারমাণবিক শক্তি উৎপাদনের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। রূপপুর পরমাণু কেন্দ্র চত্বরে এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে রাশিয়ার সেরা কর্ম কৌশল চর্চা, বহু বছরের অভিজ্ঞতা এবং বৈজ্ঞানিক চিন্তাকে কাজে লাগানো হয়েছে। রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ বলেন, বিদ্যুৎ ইউনিটের একটিভ ও প্যাসিভ ব্যবস্থার অনন্য সংমিশ্রণ কেন্দ্রের নিরাপদ পরিচালনা নিশ্চিত করবে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পিত মাত্রার নিশ্চয়তা দিবে। তিনি বলেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎ শিল্পের উন্নয়ন কেবল বাংলাদেশে জ্বালানি সরবরাহের সমস্যার সমাধান করবে না, এই অঞ্চলের উন্নয়নে অবদান রাখবে এবং জনগণের জীবনযাত্রার মান ও বৃদ্ধি করবে।
লিখাচেভ আরও বলেন, রাশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে এই সহযোগিতা কৌশলগত। আমি এই মর্মে আত্মবিশ্বাসী যে বিদ্যুৎ প্রকৌশল এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে আরও অনেক প্রকল্প রয়েছে যা রাশিয়ান এবং বাংলাদেশী বিশেষজ্ঞরা একসঙ্গে বাস্তবায়ন করতে পারবে।
পারমাণবিক চুল্লি স্থাপনের আগে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের ক্ষেত্রে এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় এবং একই সঙ্গে প্রকল্পটি সময়মতো এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, দেশের প্রথম পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে দুইটি ইউনিট রয়েছে যার প্রতিটির ক্ষমতা ১২শ’ মেগাওয়াট।
প্রকল্প পরিচালক ও পরমাণু বিজ্ঞানী ড. মো. শওকত আকবর বলেন, কোভিড-১৯-এ কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে রূপপুরে কাজ চলছে। তিনি বলেন, ইউনিট-১ এর ভৌত কাঠামোর ভিতরে রিএক্টর প্রেসার ভ্যাসেল স্থাপনের মাধ্যমে প্রায় সব ধরনের পারমাণবিক সরঞ্জাম স্থাপনের কাজ শেষ হবে। এর ফলে, এই ইউনিটের চুল্লিটির ভিতরের কাজ প্রায় শেষ হয়ে যাবে।
রূপপুর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ পারমাণবিক শক্তি কমিশন। এটি রাশিয়ার কারিগরি ও আর্থিক সহায়তায় নির্মিত হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।