পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার চিংগরিয়া খালের পানি প্রবাহ সচল হওয়ায় খুশি স্থানীয় বাসিন্দারা। দীর্ঘদিন ধরে খালের পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভুগতে হচ্ছিল এলাকার মানুষকে, তবে সম্প্রতি খালের বাঁধ কেটে দেওয়ার ফলে খালটি আবার চলাচলযোগ্য হয়ে উঠেছে। এই উন্নয়ন সাধিত হওয়ায় খালে মাছ ধরার পাশাপাশি কৃষিকাজেও উপকারিতা পাচ্ছেন এলাকাবাসী।
কলাপাড়া পৌরসভার আওতাধীন চিংগরিয়া, রহমতপুর, টিয়াখালি ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে এই খালটির উপর নির্ভরশীল ছিলেন। এক সময়, খালের ওপর বাঁধ নির্মাণ করে মাছ চাষ শুরু করা হলেও, এর ফলে খালের পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়েছিল এবং জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছিল। স্থানীয়রা জানায়, খালের পানি প্রবাহ বন্ধ হওয়ার কারণে কৃষিকাজে সমস্যা হচ্ছিল এবং তাদের জীবিকা নির্বাহে ব্যাপক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছিল।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) চিংগরিয়া খালের রক্ষায় আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করে এবং এরপর খালের কিছু অংশের বাঁধ কেটে দেওয়া হয়। খালের পানি প্রবাহ পুনরায় সচল হওয়ার পর, এলাকার মানুষ এখন আবার খালে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করছেন। এ বিষয়ে কলাপাড়া পৌরসভার হলরুমে ১৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত পরামর্শ সভায় স্থানীয়রা তাদের সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন এবং খালের পুরো অংশ উন্মুক্ত করার জন্য আরও পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
কলাপাড়া ভূমি অফিসের তথ্যানুসারে, চিংগরিয়া খালটি কলাপাড়া পৌরসভার একমাত্র খাল। এটি খেপুপাড়া মৌজার আন্ধারমানিক নদী থেকে শুরু হয়ে ৪ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে চাকামইয়া-নিশানবাড়িয়া নদীতে মিশেছে। এই খালটি কৃষিকাজ, পানি নিষ্কাশন এবং জলাবদ্ধতা দূরীকরণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, খালটি উন্মুক্ত হওয়ার পর, তারা পুনরায় মাছ ধরার সুযোগ পাচ্ছেন। কলাপাড়া পৌরসভার চৌরাস্তা এলাকায় বসবাসকারী দিনমজুর নুর আলম বলেন, "দিনে কাজ না থাকলে খালে মাছ ধরে খাই। খালটি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, এখন আমরা খুব উপকার পাচ্ছি।" এছাড়া, চিংগরিয়া ও টিয়াখালী এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তারা এখন নিয়মিতভাবে মাছ ধরতে আসছেন।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) বরিশাল বিভাগীয় সমন্বয়কারী লিংঙ্কন বায়েন বলেন, "চিংগরিয়া খালটি জনগণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং এর রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্মুক্তকরণ অত্যন্ত জরুরি।"
এদিকে, কলাপাড়া বাসী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম খালটির সীমানা নির্ধারণ, দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং খালের খনন কাজ শীঘ্রই সম্পন্ন করার আহ্বান জানিয়েছেন।
স্থানীয়দের মতে, যদি খালের পুরো অংশ উন্মুক্ত করা যায়, তবে পুরো কলাপাড়া পৌরসভা এবং টিয়াখালী ইউনিয়ন এর উপকারিতা পাবে, এবং স্থানীয় কৃষকরা শীত মৌসুমে আবার তাদের জমিতে কৃষিকাজ করতে সক্ষম হবেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।