নিজের জালে নিজেই জড়াচ্ছে মোদি সরকার!

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার ৩১শে আগস্ট ২০১৯ ০৪:৫৯ অপরাহ্ন
নিজের জালে নিজেই জড়াচ্ছে মোদি সরকার!

কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলুপ্তির পর মোদী সরকারের আরেকটি বড় পদক্ষেপ জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি)। শনিবার (৩১ আগস্ট) সকালে প্রকাশিত এর চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়েছে ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জনের নাম। এর মধ্যে ১১ লাখেরও বেশি হিন্দু বাঙালি, ছয় লাখের বেশি বাঙালি মুসলমান আর বাকি দুই লাখ বিহারী, নেপালী, লেপচা ও মাড়োয়ারি মিলিয়ে। এনআরসির এ তালিকা দেখে কপালে ভাঁজ পড়েছে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার দুইয়েরই। কারণ, বাদ পড়া ব্যক্তিদের মধ্যে বিপুল সংখ্যক হিন্দু বাঙালি রয়েছেন। এদের সিংহভাগই আসামের প্রকৃত বাসিন্দা বলে মনে করছে আসাম সরকার। ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করেছেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল। দরকার হলে আইন সংশোধন করা হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র।

এ বিষয়ে ইতিহাসবিদ সন্দীপ মুখার্জী বলেন, বিজেপি নিজের জালে নিজেই জড়াচ্ছে। তারা ভেবেছিল, রাজীব গান্ধী ও আসাম গণপরিষদের মধ্যে হওয়া চুক্তিতে ঘোলা জলে মাছ ধরবে। অনুপ্রবেশকারী ঠেকাতে গিয়ে এখন নিজেদের পায়ে নিজেরাই কুড়াল মারছে। সরকারের ভুয়া হিন্দুত্ব ছাড়া আর কিছু নেই। জিডিপি পড়ছে, বেকারত্ব বাড়ছে, শিল্প নেই, মেধা দেশের বাইরে, একটাই জীবিত আছে- ভুয়া হিন্দুত্ব। সেটাও এ এনআরসি গিলে নিয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট কারও তাবেদারী না করে একদম ঠিক রায় দিয়েছে। আসলে, বিজেপি শুরু করতে জানে, শেষ করতে জানে না।

দীর্ঘদিন বাঙালি উদ্বাস্তুদের নিয়ে কাজ করা সুকুমার সরকার বলেন, ২০০৩ সাল থেকে বিজেপি বিদেশ থেকে আসা হিন্দুদের নিয়ে ভলিবল খেলছে। মুখে বলছে, এসব হিন্দু বাঙালিরা অনুপ্রবেশকারী নয়। কিন্তু, আইনে সে কথার উল্লেখ নেই। আইন বলছে, ১৯৭১-এর পরে যারা এসেছে, তারা সবাই অনুপ্রবেশকারী। সংবিধানের বিদেশি আইনে গ্রেফতার হয়েছে বাংলাদেশ থেকে আসা বহু হিন্দু। কথা আর কাজে এক নয় বিজেপি। তিনি বলেন, সরকার তিন তালাক নিয়ে তড়িঘড়ি বিল পাস করালো। নাগরিক সংশোধনী বিল সংসদে আজও পাস হলো না। আমি নীতিগতভাবে এ বিলের সমর্থক নই। এটি মানুষদের নাগরিক থেকে উদ্বাস্তু বানাবে। আজকের এ ঘোষণায় ভারতীয় মুসলমানদের ওপর অন্যায়-অত্যাচার হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে, যা পশ্চিমবঙ্গের জনজীবন আরও অস্থির করে তুলবে। আইন-শৃঙ্খলারও অবনতির চূড়ান্ত আশঙ্কা থাকছে।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব