পটুয়াখালীর বহালগাছিয়া এলাকার শিক্ষক দম্পতি হত্যাকাণ্ডের তদন্তে পুলিশের ভূমিকাকে কেন্দ্র করে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২৫ নভেম্বর) পটুয়াখালী প্রেসক্লাব মিলনায়তনে নিহত দম্পতির সন্তান আবুল বাশার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ সাংবাদিকদের সামনে বেশ কিছু অভিযোগ তুলে ধরেন। তার দাবি, মামলার তদন্ত এখনও সম্পূর্ণ সঠিকভাবে হচ্ছে না এবং পুলিশ কর্তৃক তাকে হেনস্থা করা হয়েছে।
আবদুল্লাহ অভিযোগ করেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে দুই আসামীকে গ্রেফতার করা হলেও, তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করা হয়নি। "গ্রেফতারের পর আসামীদের দ্রুত আদালতে সোপর্দ করা হয়, তবে মামলার সঠিক তদন্ত এবং আসামীদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। এমনকি মামলার বাদি হিসেবে পুলিশের দুর্ব্যবহারের শিকার হয়েছি," বলেন আবদুল্লাহ।
তিনি আরও জানান, ৩১ অক্টোবর সকালে বাড়িতে চুরি করতে আসা সাইফুল নামে এক দুষ্কৃতকারীকে গ্রামবাসী পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাইফুল হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন এবং তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে অপর এক আসামী গ্রেফতার হয়। তবে ১ নভেম্বর সকালে ডিবি হেফাজত থেকে সাইফুল পালিয়ে যায় এবং ১১ নভেম্বর ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে আবার গ্রেফতার করা হয়।
ঘটনার পর আবদুল্লাহ জানিয়েছেন, ১২ নভেম্বর ডিবি অফিসে তদন্তকারী কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনার জন্য গেলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আহামাদ মইনুল হাসান তাকে অপমান করে রুম থেকে বের করে দেন। এরপর এসআই মহসিনের অযৌক্তিক আচরণ ও হেনস্থার শিকার হন তিনি। এ ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতা ও উদ্বেগ প্রকাশ করে মামলার বাদি বলেন, "এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড, যেখানে ভাড়াটে লোকদের দিয়ে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।"
আবদুল্লাহ আরও দাবি করেন, "চুরি করতে আসা দুই ব্যক্তি কেন এত দ্রুত দুটি বৃদ্ধাকে হত্যা করবে, তা বুঝতে পারছি না। আর আসামীরা জিজ্ঞাসাবাদে যে তথ্য দিয়েছে, তা বিশ্বাসযোগ্য মনে হয় না।" তিনি পুলিশের ওপর আস্থা রাখেন, তবে দাবি করেন সঠিক তদন্তের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য বেরিয়ে আসবে।
সংবাদ সম্মেলনে আবদুল্লাহর পাশে ছিলেন নিহত দম্পতির মেয়ে ফেরদৌসী বেগম ও মেহেরুন্নেছা মনি। তারা পুলিশ তদন্তে স্বচ্ছতা এবং ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আহামাদ মইনুল হাসান এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগগুলোর বিরুদ্ধে পাল্টা সাফাই দেন। তিনি বলেন, "অতিথিরা তদন্তকারী কর্মকর্তার কক্ষে ঢুকে পড়লে আমরা তাদের পরিচয় জানার চেষ্টা করি। তবে মামলার বাদীকে যেভাবে অভিযোগ করেছেন, তা সঠিক নয়।" এছাড়াও, এসআই মহসিনের সাথে বাদির সম্পর্কের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
এ ঘটনার পর মামলার বাদি ও পুলিশের মধ্যে দ্বন্দ্ব আরও তীব্র হয়েছে এবং তদন্তের স্বচ্ছতা নিয়ে স্থানীয় জনগণের মাঝে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।