ভারতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। সোমবার (১৮ জুলাই) সকালে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটির ১৫তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এনডিএ প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মু এবং বিরোধী দলগুলোর প্রার্থী যশবন্ত সিনহা।মূলত ভারতের পরবর্তী প্রেসিডেন্টকে বেছে নিতে দেশটির প্রায় ৪ হাজার ৮০০ জন সংসদ সদস্য ও বিধায়ক ভোট দিচ্ছেন। সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় বার্তাসংস্থা এনডিটিভি।
সংবাদমাধ্যম বলছে, দ্রৌপদী মুর্মু ভারতের ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) মনোনীত প্রার্থী। বিজেপি নেতৃত্বের হিসাব অনুযায়ী, দ্রৌপদী মোট ভোটের অন্তত ৬২ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়লাভের মাধ্যমে ভারতের ১৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হতে চলেছেন।
অন্যদিকে বিরোধী দলগুলোর মনোনীত প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী যশবন্ত সিনহা প্রায় প্রতিদিনই নির্বাচনের প্রচারে নিজের প্রচারণা চালিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস জানিয়েছে, যশবন্ত সিনহা যেন বিরোধীদের পুরো ভোটটিই পান তার ব্যবস্থা করেছে তারা।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এক দিন আগে এনডিএ প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মু বলেন, তিনি প্রার্থী হওয়ায় দেশের আদিবাসী ও নারীরা আনন্দিত। রোববার দিল্লিতে এনডিএ সংসদ সদস্য সামনে হাজির হয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে তাদের সমর্থন চেয়ে মুর্মু বলেন, ‘আমাকে প্রার্থী করায় আদিবাসী ও নারীদের মধ্যে আনন্দ ছড়িয়ে পড়েছে। দেশে দশ কোটি আদিবাসী রয়েছেন। আদিবাসীদের মধ্যে সাতশোর বেশি সম্প্রদায় রয়েছে। সকলেই আমার মনোনয়নে আনন্দিত।’
সোমবারের এই নির্বাচনে ভারতের প্রায় ৪ হাজার ৮০০ জন সংসদ সদস্য ও বিধায়ক ভোট দিচ্ছেন। বিজেপি নেতৃত্বের হিসাব অনুযায়ী, দ্রৌপদী মোট ভোটের অন্তত ৬২ শতাংশ ভোট পেয়ে জিততে চলেছেন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারে যশবন্ত সিনহা প্রায় প্রতিদিনই নিজের কথা বলার ব্যাপারে সরব থাকলেও মুর্মু প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি।
অবশ্য যশবন্ত যা-ই বলুন, বিজেপি মনে করছে, দুই-তৃতীয়াংশ ভোট পেয়ে মুর্মু ভারতের প্রথম আদিবাসী নারী হিসেবে পঞ্চদশ প্রেসিডেন্ট পদে শপথ নেবেন। গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রামনাথ কোবিন্দ ৬৫.৬৫ শতাংশ ভোট পেয়ে জিতেছিলেন।
এবার ১০ লাখ ৮৬ হাজার ৪৩১ ভোটের মধ্যে দ্রৌপদী মুর্মু ৬ লাখ ৬৭ হাজারের বেশি ভোট পাবেন বলে বিজেপির ধারণা। কারণ বিজেপি তথা এনডিএ-র বাইরেও বিজেডি, ওয়াইএসআর কংগ্রেস, বিএসপি, তেলুগু দেশম, জেডিএস, অকালি দল, শিবসেনা, জেএমএম মুর্মুকে সমর্থন করছেন। এর বাইরে অন্য দলের অনেকে মুর্মুকে ভোট দিতে পারেন।
নির্বাচনে জেতার জন্য কোনো প্রার্থীকে পাঁচ লাখ ৪৩ হাজার ২১৬ ভোট পেতে হবে। সোমবার ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হওয়ার পর আগামী ২১ জুলাই ফল ঘোষণা করা হবে। এরপর ২৫ জুলাই শপথ গ্রহণ করবেন নতুন প্রেসিডেন্ট। এরপর আগামী ৬ আগস্ট হবে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন।
উল্লেখ্য, ভারতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হয় না। সংসদ সদস্য, বিধায়কদের ব্যালটে ভোট দিতে হয়। জানাতে হয় প্রথম এবং দ্বিতীয় পছন্দও।বেগুনি রঙের পেন দিয়ে ভোট দিতে হবে সংসদ সদস্য, বিধায়কদের। তবে সংসদ সদস্যদের জন্য থাকবে সবুজ রঙের ব্যালট পেপার, বিধায়কদের জন্য গোলাপি রঙের।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।