আসছে গুটিবসন্ত, সতর্ক হচ্ছেন কি!

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: বুধবার ৩১শে জুলাই ২০১৯ ০২:০৬ অপরাহ্ন
আসছে গুটিবসন্ত, সতর্ক হচ্ছেন কি!

যদিও এখন এই রোগ তেমন কিছুই না, খুব সামান্য ওষুধেই সেরে যায় তবে এর অতীত ইতিহাস ছিল খুব ভয়াবহ। ১৮ শতকের দিকে ইংল্যান্ডে প্রতি বছর এই রোগে আক্রান্ত হয়ে ৪,০০,০০০ লোক মৃত্যুবরণ করত। ২০০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই অসুখ ভারতে রাজত্ব করেছে। পৃথিবীতে শেষবার স্মল পক্স বা গুটি বসন্তের বড় মাপের মহামারী হয়েছিল ১৯৭৪ সালে ভারতে। হাজার হাজার লোকের মৃত্যু হয়েছিল সেই মহামারীতে। সে বছর উত্তরপ্রদেশ এবং বিহারে এক লাখ দশ হাজার মানুষ গুটি বসন্তে আক্রান্ত হয়েছিল। মারা গিয়েছিল ২০ হাজারের মতো। আক্রান্ত রোগীদের একেবারে বিচ্ছিন্ন করে সেই মহামারী সামাল দেওয়া হয়েছিল। ১৯৭৪ সালের গুটি বসন্তের সেই মহামারী ঠেকাতে প্রত্যক্ষভাবে অংশ নিয়েছিলেন ড. মহেন্দ্র দত্ত এবং ড. ল্যারি ব্রিলিয়ান্স। 

এই মহামারী ঠেকাতে নজিরবিহীন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল সে সময়। এক কোটি গুটি বসন্তের টিকা দেওয়া হয়েছিল। ১০ লাখ সুঁই ব্যবহার করা হয়েছিল। ছয় লাখ গ্রামের ১২ কোটি বাড়িতে গিয়ে গিয়ে গুটি বসন্তের রোগীর সন্ধান করা হয়েছিল। এ কাজে লাগানো হয়েছিল ১,৩৫,০০০ স্বাস্থ্যকর্মী। মারাত্মকভাবে আক্রান্ত বিহার রাজ্যে সেই উদ্যোগের নেতৃত্বে ছিলেন ড. মহেন্দ্র দত্ত। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে তাকে বিহারে পাঠানো হয়েছিল। যে বছরখানেক ধরে গুটি বসন্তের প্রকোপ চলেছিল, পুরো সময়টা তিনি সেখানে ছিলেন।

দুটো দল কাজ করছিল। একটি দলের কাজ ছিল নতুন রোগী খুঁজে বের করা, অন্য দলটির কাজ রোগের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে রাখা। ড. মহেন্দ্রের দায়িত্ব ছিল এ দুই দলের তদারকি করা। কোথাও অসুবিধা দেখা দিলে দ্রুত সেটা দূর করা। প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছিল গুটি বসন্ত। ফ্লু ভাইরাসের একজনের কাছ থেকে আরেকজনের শরীরে ছড়িয়ে পড়ছিল জীবাণু। দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আরেকটি কারণ ছিল ঘনবসতি। অনেক বাড়িতে ছিল একটি মাত্র ঘর। ড. অ্যাডওয়ার্ড জেনার নামে একজন ব্রিটিশ ডাক্তার ১৭৯০ সালের দিকে গুটি বসন্তের টিকা আবিষ্কার করেছিলেন। ৫০ এবং ৬০-এর দশকজুড়ে ভারতে এই টীকার ব্যাপক ব্যবহার হয়েছিল। কিন্তু তারপরও কিছু কিছু এলাকায় এই রোগ থেকেই গিয়েছিল। গুটি বসন্ত নির্মূল করার ব্যাপক এক কর্মসূচির ফলে উত্তরপ্রদেশ, বিহার, মধ্যপ্রদেশ এবং পশ্চিম বাংলায় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার সংখ্যা কমানো সম্ভব হয়েছিল।

ইনিউজ ৭১/এম.আর