ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় একটি প্রাইভেট কারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। আওয়ামী লীগের দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক কঠোর হরতালের মধ্যে এ ধরনের ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা গুঞ্জন চলছে। অগ্নিকাণ্ডের পর নবীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে গাড়ির চালক কিংবা মালিককে পাওয়া না যাওয়ায় এটি পরিকল্পিত নাশকতা কি না, সে বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
মঙ্গলবার ভোরে নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের গজনাইপুর নামকস্থানে সিলেটগামী একটি প্রাইভেট কারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস জানায়, গাড়িটি মহাসড়কের মাঝামাঝি অবস্থানে ছিল, তবে এটি চলন্ত ছিল নাকি পার্ক করা ছিল, তা স্পষ্ট নয়। আগুন লাগার প্রকৃত কারণ এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে গাড়িটির সিলিন্ডার অক্ষত থাকায় এবং চালক-মালিককে না পাওয়ায় বিষয়টি সন্দেহজনক বলে মনে করা হচ্ছে।
এ ঘটনায় বিএনপি সরাসরি আওয়ামী লীগকে দোষারোপ করছে। গজনাইপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়ের কায়েদ অভিযোগ করে বলেন, "স্বৈরাচার খুনি হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য আওয়ামী লীগের ডাকা হরতালে পরিকল্পিতভাবে নাশকতা চালানো হয়েছে। পুরনো ও কম মূল্যের একটি প্রাইভেট কারে ভোরে আগুন লাগানোর ঘটনা প্রমাণ করে, এটি সাজানো ঘটনা।" তিনি আরও দাবি করেন, যেহেতু নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের বাড়ি এই এলাকায়, তাই তারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন।
এদিকে, নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শিহাব আহমেদ চৌধুরী বলেন, "এটি পরিকল্পিত নাশকতা। খুনি হাসিনার এমপি কেয়া চৌধুরীর নির্দেশেই আওয়ামী লীগের নেতারা এ ঘটনায় জড়িত থাকতে পারেন। আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অনুরোধ জানাচ্ছি, তারা যেন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে।"
তবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
নবীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ইনচার্জ সাজেদুর রহমান জানান, "ভোরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। কোনো হতাহতের আলামত পাওয়া যায়নি। গাড়ির সিলিন্ডার অক্ষত থাকায় এটি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কারণে ঘটেছে বলে মনে হয় না।"
এদিকে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, "অগ্নিকাণ্ডের খবর পাওয়ার পরপরই পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে কীভাবে আগুনের সূত্রপাত হলো, সেটি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আমরা তদন্ত করে দেখছি, এটি কোনো নাশকতা কিনা।"
অগ্নিকাণ্ডের কারণ এখনো স্পষ্ট নয়। এটি দুর্ঘটনা, নাকি পরিকল্পিত নাশকতা—তা নির্ধারণে তদন্ত চলছে। গাড়ির মালিক ও চালকের অনুপস্থিতি এবং রাজনৈতিক দলগুলোর পাল্টাপাল্টি অভিযোগের কারণে ঘটনাটি আরও রহস্যময় হয়ে উঠেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তের পরই প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।