হিলিতে তীব্র গরমে ঘনঘন লোডশেডিং, জনজীবনে নাভিশ্বাস

নিজস্ব প্রতিবেদক
গোলাম রব্বানী, উপজেলা প্রতিনিধি হিলি (দিনাজপুর)
প্রকাশিত: সোমবার ৮ই এপ্রিল ২০২৪ ০৬:০৫ অপরাহ্ন
হিলিতে তীব্র গরমে ঘনঘন লোডশেডিং, জনজীবনে নাভিশ্বাস

চলছে চৈত্র মাস কোথাও বৃষ্টির দেখা নেই। তার ওপর আবার রমজান মাস। তীব্র গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দিনাজপুরের হিলিতে বেড়েছে পল্লী বিদ্যুৎ এর ঘনঘন লোডশেডিং। এতে সাধারণ জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। অপরদিকে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্তৃপক্ষ বলছেন, চাহিদার তুলনায় অর্ধেকের কম সরবরাহ পাওয়ায় লোডশেডিং চলছে।


জানা গেছে, হাকিমপুর হিলি এলাকায় ফুলবাড়ি তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ পেয়ে থাকে হিলি সাব জোনাল অফিস। হাকিমপুর হিলি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর আওতাধীন এলাকায় রয়েছে কয়েক হাজার গ্রাহক।


গ্রাহকদের অভিযোগ, গরমের শুরু থেকেই লোডশেডিং শুরু হয়েছে। একদিকে তীব্র গরম অন্য দিকে রমজান মাস সব মিলে সাধারণ জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। হঠাৎ করে মারাত্মক লোডশেডিং চলছে। দিনরাত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অর্ধেক সময়ে চলছে লোডশেডিং। টানা দেড় থেকে দুই ঘণ্টা পরে বিদ্যুৎ আসলে আবারও এক দেড় ঘণ্টা পরে বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে এভাবেই পল্লী বিদ্যুৎ এর অসহনীয় লোডশেডিং চলছে। গরমে শিশু ও বয়স্কদের ভোগান্তি বাড়ছে। ভোগান্তি বেড়েছে, সংবাদকর্মী, পেশাজীবী, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের। স্কুল ও কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে।


উপজেলার আলিহাট ইউনিয়নের কোকতাড়া গ্রামের মোস্তাফিজার রহমান ও মিজানুর রহমান বলেন, হঠাৎ করে পল্লী বিদ্যুৎ এর ঘনঘন লোডশেডিং শুরু হয়েছে। তারা বলেন বর্তমানে রমজান মাস ইফতারি, সেহরি ও তারাবি নামাজ এর সময় বিদ্যুৎ না থাকলে মানুষের সবচেয়ে বেশি কষ্ট। আমরা গ্রামের মানুষ আমাদের কথা কে শোনে! এখন এমন অবস্থা বিদ্যুৎ কখন আসে সেই অপেক্ষায় থাকতে হয়। গতকাল রাতে প্রতি ঘন্টায় কম পক্ষে দুই বার যাচ্ছে আবার আসছে।


হাকিমপুর হিলি পৌরসভা এলাকার ডাঃ সাইদুর রহমান, আল রাফি ও চা দোকান মালিক সিরাজুল ইসলাম বলেন, তীব্র গরমের কারণে এমনিতেই খুব খারাপ অবস্থা। তার উপর ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। রাতে দিনে মিলে ২৪ ঘন্টায় গড়ে ১৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ পাওয়া অসম্ভাব হয়ে উঠেছে। তারা বলেন একবার বিদ্যুৎ আসলে সর্বোচ্চ ১ ঘন্টা থাকছে আর চলে মিনিমাম দেড় ঘন্টা পরে আসছে। 


উপজেলার বাংলাহিলি ডলি মেমোরিয়াল স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাহারিয়ার আলমাস রক্তিম বলেন, তীব্র গরমে জীবন অতিষ্ঠ হয়েছে। তার ওপর আবার ঘনঘন বিদ্যুৎ এর লোডশেডিং। ক্লাসের পড়া শোনাও ঠিক মতো করতে পারছি না। গতকাল রাতে ৬-৭ বার বিদুৎ আসা যাওয়া করেছে। আজ দিনের বেলাও একই অবস্থা।


হাকিমপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি গোলাম মোস্তাফিজার রহমান মিলন বলেন, হঠাৎ করে হিলিতে পল্লী বিদ্যুৎ এর ঘনঘন লোডশেডিং শুরু হয়েছে। কোন গুরুত্বপূর্ণ নিউজ করতে বসে কম্পিউটার চালু করে অর্ধেক কাজ করতে দেখা যায় বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। এতে এই উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সংবাদকর্মীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।


হাকিমপুর হিলি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর সাব জোনাল অফিসের এজিএম বিশ্বজিৎ সরকার বলেন, হঠাৎ করে কয়েক দিন থেকে তীব্র গরমের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে গেছে, যার ফলে প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না।


তিনি বলেন আমাদের হাকিমপুর হিলি এলাকার জন্য প্রতিদিন প্রয়োজন ৭-৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। তার বিপরীতে বিদ্যুৎ পাচ্ছি আড়াই থেকে তিন মেগাওয়াট। কখন কখন আবার ২ মেগাওয়াট। যার ফলে ঘনঘন লোডশেডিং চলে। তবে শীঘ্র বিদ্যুৎ এর উৎপাদন বেড়ে যাবে। তারপর আর লোডশেডিং থাকবে না বলে জানান তিনি।


লোডশেডিং কারো হাতে নাই। এখানে আমাদের করার কিছু নেই। এটি উপর মহলের বিষয়।