"আজীবন ক্ষমতা চায় অনেক উপদেষ্টা"- মেজর হাফিজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ সাইফুল ইসলাম, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ১৫ই অক্টোবর ২০২৪ ০৭:০৩ অপরাহ্ন
"আজীবন ক্ষমতা চায় অনেক উপদেষ্টা"- মেজর হাফিজ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, অনেক উপদেষ্টা আজীবন ক্ষমতায় থাকার ইচ্ছা পোষণ করেন, যা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্য ক্ষতিকর। 


১৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ লেবার পার্টির আয়োজিত ‘গণ-অভ্যুত্থান জন-আকাঙ্ক্ষা: রাষ্ট্র মেরামতে প্রস্তাবনা’ শীর্ষক সভায় তিনি বলেন, "বর্তমান সরকার গঠিত হয়েছে জনরায়ে। তবে যতই দিন যাচ্ছে, আমাদের হতাশা বাড়ছে।" তিনি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দেশের কৃতি সন্তান হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, "তাঁর টিম সিলেকশন সম্পর্কে চিন্তা করতে হবে। কারণ, যারা নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে আছেন, তাদের অনেকের ক্ষমতায় থাকার ইচ্ছা রয়েছে।"


সরকারের সমালোচনা করে হাফিজ বলেন, "ড. ইউনূস অনেক উপদেষ্টাকে একাধিক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন, কিন্তু তাদের অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের মধ্যে থেকে দক্ষতার ভিত্তিতে লোক নিয়োগ করা উচিত।"


তিনি সরকারকে সতর্ক করে বলেন, "সর্বশেষ ছয়টি কমিশনের প্রজ্ঞাপন করতে ছয় দিন লেগেছে, যা সাধারণ মানুষের হতাশা বাড়াচ্ছে।" হাফিজ মনে করেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান কাজ হলো নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা, কিন্তু নির্বাচন কবে হবে সে বিষয়ে কোনো স্পষ্টতা নেই।


আলোচনায় রাষ্ট্র সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, "আওয়ামী লীগের আর রাজনীতি করার অধিকার নেই। তারা দেশের জন্য ক্ষতি করেছে।" তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সংরক্ষণের আহ্বান জানান এবং সরকারকে সতর্ক করে বলেন, "যতদূর সম্ভব জনগণের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে মিলে রাজনৈতিক সংস্কার আনতে হবে।"


বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান রাষ্ট্র সংস্কারের ২৩ দফা প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। এ প্রস্তাবনায় নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ ও রাজনৈতিক সংস্কার আনার জন্য বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি কার্যকরী সরকার গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।


সভায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া, এবং অন্যান্য রাজনৈতিক নেতারা। বক্তারা সরকারের বর্তমান অবস্থান ও পরিকল্পনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং জনগণের কাছে ফিরে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।