ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ২০ লাখ টাকা আত্মসাৎ, লাপাত্তা এনজিও

নিজস্ব প্রতিবেদক
মইনুল হক মৃধা-রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: বুধবার ১৯শে মার্চ ২০২৫ ০৯:৪৩ অপরাহ্ন
ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ২০ লাখ টাকা আত্মসাৎ, লাপাত্তা এনজিও

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ‘ঊষার আলো ফাউন্ডেশন’ নামে একটি রেজিস্ট্রেশন বিহীন এনজিও গ্রাহকদের অন্তত ২০ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে পালানোর অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন যে, সংস্থাটি সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে টাকা নিয়েছিল এবং পরে অফিস বন্ধ রেখে পালিয়ে যায়।


গোয়ালন্দ ঘাট থানায় এক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সাইফুল ইসলাম নামে এক ভুক্তভোগী। অভিযোগে তিনি জানান, উজানচর ইউনিয়নের জামতলা হাটে তার দোকানে ‘ঊষার আলো ফাউন্ডেশন’ সংস্থার কর্মকর্তারা গিয়ে ১০ লাখ টাকার ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখান। তবে ঋণ নিতে হলে তাকে ৮০ হাজার টাকা সঞ্চয় এবং ৫ হাজার টাকা বীমা বাবদ জমা দিতে বলা হয়। সাইফুল ইসলাম অনেক কষ্টে ৭৫ হাজার ৫০০ টাকা জমা দেন। কিন্তু নির্ধারিত তারিখে ঋণ নিতে গিয়ে তিনি দেখেন, অফিস তালাবদ্ধ এবং সংস্থার কর্মকর্তাদের ফোনও বন্ধ।


এ ঘটনার পর মঙ্গলবার বিকেলে গোয়ালন্দ পৌর শহরের নিলু শেখের পাড়ায় ‘ঊষার আলো ফাউন্ডেশন’-এর অফিসে ছুটে আসেন রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম। তিনি জানান, তিনি ঋণ পাওয়ার আশায় ৬০ হাজার টাকা জমা দেন, কিন্তু এখন জানতে পারছেন যে, সংস্থাটি ভুয়া এবং প্রতারক। তিনি এবং অন্যান্য ভুক্তভোগীরা তাদের টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য অভিযুক্তদের আটক করার দাবি জানান।


ঊষার আলো ফাউন্ডেশনের ভাড়া নেওয়া ভবনের মালিক নাজমুল হাসান জানান, সংস্থাটি ১০ মার্চ তাদের বাসায় ওঠে এবং প্রতি মাসে ৭ হাজার টাকা ভাড়া দেওয়ার কথা ছিল। ২০ মার্চ লিখিত চুক্তি করার কথা ছিল, কিন্তু ১৬ মার্চ থেকে তারা অফিসে আসেনি।


ঊষার আলো ফাউন্ডেশনের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার পরিচয়দানকারী মো. রুবেল হাসানসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।


এ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. রুহুল আমিন বলেন, তিনি গত রবিবার জানতে পারেন যে, ‘ঊষার আলো ফাউন্ডেশন’ নামে একটি এনজিও এই উপজেলায় কার্যক্রম চালাচ্ছে। তবে তারা রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শুরু না করে পালিয়ে গেছে এবং সংস্থাটি রেজিস্ট্রেশন তালিকায় নেই।


গোয়ালন্দঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চালানো হবে এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।