চার বছর বয়সী ফুটফুটে শিশু আরিফুল শিকদার। বয়সের তুলনায় তার মাথা অস্বাভাবিক বড়। টাকার অভাবে বিনাচিকিৎসা তার মাথা দিনদিন আরো বড় হয়ে যাচ্ছে। আরিফুল কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার তিলাই ইউনিয়নের দক্ষিণ ছাট গোপালপুর গ্রামের মমিন শিকদারের ছেলে।
আরিফুলের সমবয়সী শিশুরা যখন হেসে খেলে দুরন্তপনায় মত্ত আরিফুলকে তখন কোলে নিয়ে ঘুরতে হয়। নতুবা শুইয়ে রাখতে হয়। অস্বাভাবিক বড় মাথার কারণে শিশুটি না পারে ঠিকমত বসতে না পারে হাঁটাচলা করতে। বেশিক্ষণ শুইয়ে রাখলে অস্থির হয়ে কান্নাকাটি করে। অস্বাভাবিক বড় মাথার ওজনের কারণে সবসময় কোলে রাখাও কষ্টকর।
আরিফুলের কষ্ট কিছুটা কমাতে দুটো খুঁটিতে একসাথে দু’টি রশি বেধে সেই রশির মাঝে তাকে ঢুকিয়ে দাঁড় করিয়ে দেয়া হয়। আরিফুলের বাবাও একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। আরিফুলের মা অন্যের কাঁথা সেলাই আর হাঁস-মুরগি পালন করে যা আয় করেন তাই দিয়ে চলে সংসার। আরিফুলের ভবিষ্যৎ চিন্তায় উদ্বিগ্ন তারা বাবা-মা। জন্মের সময় অরিফুলের মাথা অস্বাভাবিক বড় ছিল। চিকিৎসকরা তার মাথার উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছিলেন। টাকার অভাবে চিকিৎসা হয়নি শিশু আরিফুলের। বয়স বাড়ার সাথে সাথে মাথা আরো বড় হয়েছে।
মাথা অস্বাভাবিক বড় হতে থাকলে স্থানীয় ক্লিনিকে সিটি স্ক্যান করানো হয়। সিটি স্ক্যানে আরিফুলের মাথার ভেতর পানি জমা থাকতে দেখা যায়। উন্নত চিকিৎসার জন্য নিউরোসার্জারি বিভাগে ভর্তির পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক।
আরিফুলের পিতা মমিন শিকদার বলেন, আরিফুলের মাথা অনেক বড়। ডাক্তার বলেছে ওর মাথার ভেতরে পানি আছে। বড় ডাক্তার দেখানো লাগবে। অপারেশন করা লাগবে। আমি একজন প্রতিবন্ধী, কাজকর্ম করতে পারিনা। ছেলের অপারেশন করার টাকা নাই।
আরিফুলের মা আয়শা বেগম বলেন, ছেলেটার বয়স চার বছর। চিকিৎসা করাতে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা লাগে। ছেলেটার জন্য কোনো কাজ করতে পারিনা। দেশের মানুষ অবুঝ শিশুটির কষ্টের কথা চিন্তা করে তার মুখের দিকে তাকিয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলে চিকিৎসা করিয়ে ওকে সুস্থ করা যাবে। আমার ছেলেটা বেঁচে থাকবে।
প্রতিবেশী রওশনারা বেগম বলেন, আরিফুলের মাথা দেখতে অনেকটা কলসের মতো। শরীরের ওজনের চেয়ে মাথার ওজন বেশি। শিশুটিকে দেখে আমাদের খারাপ লাগে। শিশুটিকে সারাক্ষণ কোলো রাখে তার মা। অন্যরা শিশুটিকে কোলে নিতে পারেনা।
তিলাই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল বলেন, মমিন শিকদারের পরিবারটি অত্যন্ত দরিদ্র। সন্তানের চিকিৎসা করার সামর্থ্য তার নেই। দেশের মানুষ সহযোগিতা করলে হয়তো চিকিৎসার মাধ্যমে শিশুটিকে বাঁচানো যাবে।
আরিফুলের চিকিৎসার জন্য সহায়তা পাঠানো যাবে, বিকাশ/নগদ-০১৭৯৫১৮৪৪৬৭ ও বিকাশ/নগদ/রকেট/উপায়-০১৭২৭৮৩৮৪০১ নম্বরে।