প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৪৯
কুমিল্লার দেবীদ্বারে নিখোঁজ নাটক সাজিয়ে স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যরা করিম ভূঁইয়া (৫০)কে শ্বশুরবাড়িতে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। নিহতের স্ত্রী তাসলিমা বেগম ও শ্যালক মোজাম্মেলসহ অন্য আসামিরা কুমিল্লা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।
নির্যাতিতার অভিযোগ অনুযায়ী করিম ভূঁইয়া প্রায়ই স্ত্রী ও মেয়ের সঙ্গে ঝগড়া করত এবং শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত। মাদক সেবনের কথাও উল্লেখ করেছেন তাসলিমা। এসব সমস্যার কথা তিনি তার বাপের বাড়ির ভাইদের কাছে জানালে করিম ভূঁইয়াকে শ্বশুরবাড়িতে ডাকার উদ্যোগ নেন তারা।
১৩ আগস্ট করিম ভূঁইয়া শ্বশুরবাড়িতে গেলে শ্যালক মোজাম্মেল তাকে লাঠির আঘাতে আহত করে। আহত অবস্থায় তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে লাশটি প্রথমে ঘরের পাশে খালে ফেলে দেয়া হয় এবং পরদিন হাত-পা বাঁধা অবস্থায় সেফটি ট্যাঙ্কিতে ফেলে গুম করার চেষ্টা করা হয়।
নিখোঁজের ৩৫ দিন পর ১৮ সেপ্টেম্বর গোমতী নদীর সংযোগ খালের পাশে নির্মাণাধীন সেফটি ট্যাঙ্কি থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত করিম ভূঁইয়া বড়শালঘর মন্ত্রীপুল সংলগ্ন ভূঁইয়া বাড়ির মৃত কাসেম ভূঁইয়ার পুত্র এবং পেশায় কৃষক ছিলেন।
নিহতের বড় ভাই আমির হোসেন ১৩ আগস্ট করিম ভূঁইয়াকে খুঁজে না পেয়ে ১৬ আগস্ট থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। পরে ফোনের সূত্রে মরদেহ উদ্ধারের পর ১৮ সেপ্টেম্বর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নং-১৩।
পুলিশ গ্রেফতার করে নিহতের স্ত্রী তাসলিমা বেগম (৪০), ইউনুস সরকারের ছেলে মোহাম্মদ ইসরাফিল (৪০), তার ভাই মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক (৫০) এবং মৃত মিজানুর রহমানের ছেলে মোঃ গোলাম হাক্কানীকে। পরে আদালতে আসামিরা হত্যার দায় স্বীকার করেন।
ঘটনায় দেখা যায়, পারিবারিক দ্বন্দ্ব, নিয়ন্ত্রণহীন রাগ এবং ব্যক্তিগত বিরোধে নৃশংস হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। পুলিশ ও আদালত পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করছে যাতে দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করা যায়।
এই হত্যাকাণ্ড এলাকার মানুষকে আতঙ্কিত করেছে এবং পরিবারিক ও সামাজিক মানসিকতার উপর এক গুরুতর প্রভাব ফেলেছে। স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে যাতে এ ধরনের ঘটনা পুনরায় না ঘটে।