প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২৫, ১৮:১৭
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার বনচৌকি সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ তিন বাংলাদেশিকে পুশইন করেছে। শনিবার ভোরে ঘটনাটি ঘটে। আটক হওয়া ব্যক্তিরা হলো সাতক্ষীরার শহীদুল গাজী ও আমজাদ মোল্লা এবং নড়াইলের মামুন মোল্লা। স্থানীয়রা তাদের সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখে আটক করে বিজিবির হাতে তুলে দেয়, পরে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।
জানা গেছে, ওই তিনজন প্রায় এক দশক আগে অবৈধভাবে ভারতের মহারাষ্ট্রে প্রবেশ করে এবং সেখানকার বিভিন্ন নির্মাণকাজে রাজমিস্ত্রী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। দীর্ঘদিন ভারতে অবস্থান করার পর হঠাৎ করেই বিএসএফ তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নেয়। বনচৌকি সীমান্ত দিয়ে পুশইন করার পরপরই এলাকাবাসীর তৎপরতায় তারা সনাক্ত হয় এবং নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে সোপর্দ হয়।
একই সময়ে বড়খাতা ইউনিয়নের পূর্ব সারডুবি সীমান্ত দিয়ে আরও তিনজনকে পুশইনের চেষ্টা চালায় বিএসএফ। তবে বিজিবি এবং স্থানীয়দের সক্রিয় অবস্থানের কারণে সেই চেষ্টা সফল হয়নি। বর্তমানে ওই তিনজন ভারতের সীমান্ত অংশেই অবস্থান করছেন এবং পুনরায় পুশইনের শঙ্কা রয়েছে বলে জানা গেছে।
বিজিবি সূত্রে জানা যায়, পুশইন ঠেকাতে সীমান্তে টহল জোরদার করা হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার জনগণকেও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। স্থানীয় লোকজনের তৎপরতা এবং বিজিবির তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় একটি বড় ধরনের সীমান্ত সমস্যা এড়ানো সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
হাতীবান্ধা থানার ওসি মাহামুদুন নবী বলেন, প্রাথমিকভাবে আটক ব্যক্তিদের নাম, ঠিকানা এবং নাগরিক পরিচয় যাচাই করা হয়েছে। যাচাই শেষে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন প্রশাসনের দিকনির্দেশনা অনুসারে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সীমান্ত এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশ এবং পুশইন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ রয়েছে। বিএসএফের এমন আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্থানীয় বাসিন্দারা। সীমান্তে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন মানবাধিকারকর্মীরা।
হাতীবান্ধা সীমান্তে পুশইনের ঘটনা নতুন কিছু নয়, তবে স্থানীয়দের সচেতনতা ও বিজিবির সক্রিয় ভূমিকা এবার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। সীমান্ত নিরাপত্তা এবং মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই ধরনের ঘটনার দ্রুত ও সঠিক সমাধান জরুরি বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।