প্রকাশ: ২৭ মে ২০২৫, ১৬:৩৪

কুষ্টিয়ার কালীশংকরপুর এলাকায় যৌথ বাহিনীর এক শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে দেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার ভোরে পরিচালিত এই অভিযানে তার সঙ্গে আরও সাতজনকে আটক করা হয়, যাদের মধ্যে রয়েছে আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী মোল্লা মাসুদ।
সরকারের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, ২৭ মে ভোর ৫টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত টানা তিন ঘণ্টা অভিযান চালানো হয় কুষ্টিয়া শহরের সোনার বাংলা মসজিদের পাশে একটি বাড়িতে। সেখান থেকেই সুব্রত বাইনসহ অপরাধচক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হয়।
সুব্রত বাইন নব্বইয়ের দশকে ঢাকার অপরাধজগতে একটি আতঙ্কের নাম ছিল। দরপত্র নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে তার নাম তখন প্রায়শই সংবাদের শিরোনামে আসত। এইসব কর্মকাণ্ড চালাতে গিয়ে তিনি জড়িয়ে পড়েন একাধিক খুন ও জখমের ঘটনার সঙ্গে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সূত্রের দাবি, মগবাজার এলাকার বিশাল সেন্টারকে ঘিরেই সুব্রতের উত্থান ঘটে। শুরুর দিকে তিনি চাংপাই নামের এক রেস্টুরেন্টে কাজ করতেন। সেখান থেকে ধীরে ধীরে অপরাধ জগতের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন তিনি।
পরবর্তীতে বিশাল সেন্টারই তার অপরাধী কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রে পরিণত হয়। এ কারণেই এলাকাবাসী তাকে ‘বিশালের সুব্রত’ নামেও চিনতেন।

তার বিরুদ্ধে আগেও একাধিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি ছিল, কিন্তু বহু বছর ধরে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, দেশের বাইরে ও ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলে স্থান পরিবর্তন করে তিনি নিজেকে আড়াল রেখেছিলেন।
মোল্লা মাসুদও একসময় ঢাকার অপরাধচক্রের পরিচিত নাম ছিল। তার বিরুদ্ধেও নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদের পুনরায় সক্রিয় হওয়ার আশঙ্কায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আগেই নজরদারি বাড়িয়েছিল।
এই অভিযানকে ঘিরে কুষ্টিয়া শহরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এমন অভিযান এলাকায় দীর্ঘদিন পর দেখা গেল এবং তাতে দেশের আলোচিত অপরাধীদের গ্রেপ্তার হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে।