রাজবাড়ী সদর উপজেলার পাবলিক হেলথ মোড়ে জামান স্টোরের বারান্দা থেকে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রুবেল সরদার (৪০) নামে ওই যুবকের মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। রুবেল সরদার শহরের দক্ষিণ ভবানীপুর এলাকার মৃত আলম সরদারের ছেলে। পুলিশের দাবি, রুবেল ডাকাতির প্রস্তুতি মামলার আসামি ছিলেন। তবে, রুবেলের পরিবার তার মৃত্যুর ব্যাপারে হত্যার অভিযোগ জানিয়েছে।
রুবেল সরদার ২০২৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর রাতে সদর উপজেলার খানখানাপুর রেলক্রসিং এলাকা থেকে ডাকাতির প্রস্তুতির সময় পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। তার কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছিল দুটি সুইস গিয়ার ছোরা। ওই মামলায় জামিনে ছিলেন তিনি। তবে পরিবারের দাবি, তার মৃত্যু স্বাভাবিক নয়, তাকে হত্যা করা হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা জানায়, রুবেলের শরীরে ধুলোবালি লেগে ছিল এবং তার সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়েছে, যা একে স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে অভিহিত করার পক্ষে যায় না।
রুবেলের ছোট ভাই জুয়েল সরদার বলেন, "আমার ভাই পাবলিক হেলথ মোড়ে পান-সিগারেটের দোকান চালাতেন। কিছুদিন আগে তিনি দোকানটি বিক্রি করে দিয়ে বেকার হয়ে যান। দাম্পত্য কলহের কারণে তার স্ত্রী এবং সন্তান কিছুদিন ধরে বাবার বাড়িতে থাকছেন।" তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার রাতে তাকে তার ঘরে একা দেখেছিলেন, এরপর তিনি কোথাও বের হন কিনা তা জানেন না। বুধবার সকালে খবর পেয়ে তিনি তার ভাইয়ের মরদেহ পাবলিক হেলথ মোড়ের জামান স্টোরের সামনে পড়ে থাকতে দেখেন।
রুবেলের স্ত্রী বন্যা জানায়, "মঙ্গলবার সন্ধ্যায় স্বামী তার মেয়ে হুমায়রা নিয়ে বাজারে গিয়েছিল। তারপর আমি জানি না তার কী হয়েছে, সকালে খবর পেয়ে দেখি মরদেহ পড়ে আছে।" তার মতে, স্বামী স্ট্রোক করেছিলেন, তবে তার মৃত্যুর কারণ সঠিকভাবে বলতে পারছেন না।
জামান স্টোরের মালিক শাহিদুজ্জামান শাহিন জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঝড়ের কারণে তার ছেলে দোকান বন্ধ করে বাড়ি চলে গিয়েছিল। সকাল ৭টার দিকে তিনি জানতে পারেন যে, তার দোকানের সামনে রুবেলের মরদেহ পড়ে আছে।
এদিকে, রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদুর রহমান জানান, "মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পরেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।" তবে, তার শরীরে কোনো দৃশ্যমান আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি বলে তিনি উল্লেখ করেন।
রুবেলের পরিবার হত্যার বিচার দাবি করেছে এবং ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে যদি তাকে হত্যা করা হয়ে থাকে, তবে তারা আইনি ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত।