
মৌলভীবাজারে শিশুকে পিটিয়ে হত্যা, পিতা আটক

প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৭:১৩

মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামে মাদকাসক্ত পিতার নির্মম নির্যাতনে মাহিদ নামে সাত বছরের এক শিশু নিহত হয়েছে। রবিবার বিকেলে মল ত্যাগের মতো তুচ্ছ কারণে পিতা খোকন মিয়া শিশুটিকে পিটিয়ে হত্যা করে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে। ঘটনার পর লাশ ঘরে রেখে পালিয়ে যান খোকন ও তার মা হাওয়া বেগম।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাদক ব্যবসায় জড়িত খোকন মিয়া তার দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান মাহিদকে ঘরের বাইরে এনে বেধড়ক মারধর করেন। এক পর্যায়ে শিশু পালিয়ে প্রতিবেশীর ঘরে আশ্রয় নিলে সেখান থেকে ধরে এনে উপরে ছুড়ে ফেলেন। এরপর দুই পা ধরে কংক্রিটের পিলারে মাথা আঘাত করলে শিশুটির নাক-মুখ দিয়ে রক্ত ঝরতে থাকে। প্রতিবেশীরা বাঁচানোর চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন।

গুরুতর আহত অবস্থায় খোকন নিজেই শিশুটিকে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক মাহিদকে মৃত ঘোষণা করলে খোকন মৃত্যুর কারণ গাছ থেকে পড়ে যাওয়া বলে দাবি করেন। পরে লাশ বাড়িতে নিয়ে পালিয়ে যান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও লাশ বা খোকনকে পাওয়া যায়নি। কিছুক্ষণ পর খোকন লাশ বাড়িতে রেখে ফের আত্মগোপন করেন।
রাত সাড়ে ৯টার দিকে মৌলভীবাজার মডেল থানার ওসি গাজী মাহবুবুর রহমান জানান, পুলিশি অভিযানে সদর উপজেলার জেলগেট এলাকা থেকে খোকনকে আটক করা হয়েছে। হত্যার বিষয়ে তদন্ত চলছে এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রতিবেশী যবেদা বেগম বলেন, "বাচ্চাটাকে দুই পা ধরে পিলারে মাথা মারতে থাকে, নাক দিয়ে রক্ত পড়ছিল। আমি বাঁচাতে গেলে আমাকেও দূরে সরিয়ে দেয়।" এলাকাবাসী বলছে, দীর্ঘদিন ধরে খোকন তার সন্তানদের উপর অমানবিক নির্যাতন চালালেও কেউ ভয়ে প্রতিবাদ করার সাহস পাননি।
জানা যায়, প্রথম স্ত্রী রেখে খোকন দ্বিতীয় বিয়ে করেন, তবে ওই স্ত্রী কয়েক বছর আগে চলে যান। দুই সন্তান মাহিদ ও রাফিদ বাবার কাছেই বড় হচ্ছিল। তাদের উপর দীর্ঘদিন ধরে চলা নির্যাতন এলাকাবাসী দেখলেও কিছু করতে পারেননি।

স্থানীয়রা বলছেন, মাদকাসক্ত খোকন দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল। শিশুটির মৃত্যুতে গ্রামজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এলাকাবাসীর দাবি, এমন নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।

সর্বশেষ সংবাদ
