প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২১, ১৮:৩
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইল উপজেলার গ্রামবাসীরা শাহজাদাপুর- মলাইশয়ের একটি রাস্তা নির্মাণের দাবি জানিয় আসছেন অনেক বছর ধরে। কিন্তু দীর্ঘদিনের দাবিতে প্রতিশ্রুতি আসলেও স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও রাস্তাটি নির্মাণ হয়নি' দাবি আর প্রতিশ্রুতিতে।
গ্রামবাসীরা বছরের পর বছর দুঃখ কষ্টেকরে কোনোভাবে চলাচল করে আসছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তাটি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে লোকজন চলাফেরা করছে। এলাকার শিক্ষার্থীরা, হাসপাতালে আসা রোগীদের ভোগান্তির শেষ নেই। বাইসাইকেল, মোটরগাড়ি, সি এনজি ছাড়া অন্য কোন ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারে না। এলাকাবাসী এমন করে বলেন, স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত নানা পণ্যে রাস্তার অভাবে তাদের অনেক সময় লাগে। এতে তাদের বেশী খরচ বেড়ে যায়। দেওড়া হতে রাস্তা টির পাকা করণসহ ও নির্মাণের দাবি জানিয়েছে।
ঊর্ধ্বে ষাট বা একটু কম বয়স হবে' নাম বলতে কেমন করে তাকিয়ে বলে, নাম আর কয়েন না 'আপনাদের মত এমন অনেকেই রাস্তায় এসে আমাদের নাম বলে ছবি তোলে। কতো জনপ্রতিনিধি কইলো' ঢাকা ইমুক আছে' সিমুক আছে, রাস্তা অইয়া যাইবো গা ' এইতা খুনতে খুনতে এতোদিন পার। আপনার কাছে আবার কি কমু ! দেখেন'রাস্তা না, এখানে ছোট ছোট ফেক পানির গাতা !! এমন মন্তব্য শুধু তিনি না ' মলাইশ, ধাউড়িয়া, শাজদাপুরসহ তিন গ্রামের হাজারো মানুষ বলছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,বৃষ্টি হলে রাস্তার অংশে কাদাপানি জমে। রাস্তায় রাস্তায় শুরু হয় এক চালকের গাড়ি অন্য চালক, যাত্রীসহ গাড়ির পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তার কাঁচা অংশ পার করে এ যেন নিত্যদিনের দৃশ্য। এই অবস্থাতে মুক্তি পাওয়ার জন্য ১১ বছর আগে জাতীয় সংসদের সাবেক সংসদ সদস্য এড. জিয়াউল হক মৃধার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রাস্তাটি পাকাকরণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এখন এলাকাবাসী বলেন আজ ও পর্যন্ত একটি ইট লাগেনি।
ফেক পানি দিয়ে চালাতে খুবই ভয় হয়। রাস্তার এই বেহাল দশার কারণে গাড়ির যন্ত্রাংশ ভেঙে পড়ে । তা আবার মেরামত করতে অতিরিক্ত টাকা লাগে। গাড়ির চাকা গর্তে আটকে যায়। অনেক সিএনজি অটোরিকসা চালকরা জানান, "একদিন গাড়ি চালালে পরদিন আর গাড়ি চালাতে পারি না "।
স্থানীয় বাসিন্দা চয়ন সরকার বলেন, আমার বাবা যখন চেয়ারম্যান ছিল তখন শাহজাদাপুর বাজার থেকে ব্রিজের মাথা পর্যন্ত মাটি পালিয়ে রাস্তা করেছিল।এরপরে কত জনপ্রতিনিধি আসলেন আর গেলেন কেউই এই রাস্তাতে কাজ করেন নাই। চয়ন সরকার বলেন,দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটি অবহেলায় যাতায়াত করছে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ।আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাবো এই রাস্তাটি পাকা করে এলাকার মানুষের দুর্ভোগ কমাতে।
সিএনজি চালক নিমাই বলেন, আমরা এলাকার মানুষ অনেক সময় দেখেছি এই রাস্তাদিয়ে গর্ভবতী মায়েরা যখন হসপিটালে যায় তখন তাদের ভোগান্তির শেষ হয়না পথিমধ্যে তাদের বাচ্চা জন্ম হয়ে যায়।
হাজী ইকবাল বলেন,এই রাস্তার দুর্দশা আমরা ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি। কোন সময় আল্লাহ আমাদেরকে এই রাস্তা পাকা দেখাবে আল্লাহ'ই জানে। কত এমপি-মন্ত্রীরা এ রাস্তা দিয়ে আসা-যাওয়া করেছি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এ রাস্তা করে দেবে কিন্তু সময়ে তাদের'কে পাওয়া যায় না।
এ ব্যপারে জানতে চাওয়া হলে সরাইল উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মোছা.নিলুফা ইয়াছমিন এ প্রতিনিধিকে বলেন,এ রাস্তাটি পাকা করনের জন্য তালিকা পাঠিয়েছিলাম। কিছু দিনপর এস্টিমেট পাঠানো হবে বলে, প্রকৌশলী নিলুফা ইয়াছমিন জানান।
সরাইল উপজেলা নির্বাহি অফিসার মো. আরিফুল হক মৃদুল বলেন, কিছু দিন আগে রাস্তাটি উঁচু করতে পিআইও প্রজেক্ট এর মাধ্যমে কাজ করা হয়েছে। উপজেলার এলজিইডি পিচের ঢালাই সড়কে রূপান্তরিত করতে এ অর্থবছরের চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে আমরা আশা করছি ইনশাআল্লাহ এবার রাস্তাটি কাজ হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩১২ সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম শিউলি আজাদ এ প্রতিনিধি কে বলেন, এ সরকারের আমলে অনেক রাস্তাঘাট করা হয়েছে। আরো নতুন নতুন রাস্তা হচ্ছে। এ রাস্তার পিচ ঢালাই এর প্রক্রিয়া চলছে। খুব শীঘ্রই এ রাস্তার কাজও হবে। তখন আর মানুষের দুর্ভোগ থাকবে না।