প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২১, ১৪:৩৮
নওগাঁ সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে জমি রেজিষ্ট্রি করার পর দলিল জমা দেয়ার সময় জমি ক্রেতার -বিক্রেতার উভয়ের কাছে থেকে অফিস এন্টি পত্রে স্বাক্ষর ও টিপসই বাবদ ১০০-থেকে ১৫০টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে অস্থায়ী অফিস সহকারী মো. মিলন এর বিরুদ্ধে।
সোমবার সরেজমিনে দুপুর ১টার দিকে নওগাঁ সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে গিয়ে দেখা যায় জমির ক্রয়-বিক্রয় এর দলিল উপজেলা সাব রেজিষ্টার অনুমোদন দেয়ার পর সেই দলিলগুলো সরকারি খাতায় নাম এন্ট্রি বাবদ জমি ক্রেতা ও বিক্রেতাদের নিকট থেকে অভিযুক্ত অস্থায়ী অফিস সহকারী মিলন ১০০-১৫০টাকা করে নিচ্ছেন। সেই সাথে কারো কারো নিকট থেকে ৫০-৬০টাকা করে নেয়ারও সত্যতা পাওয়া যায়।
এসময় টাকা নেয়ার ছবি ও ভিডিও ধারণ করতে গেলে তারাহুড়ো করে টেবিলের এন্ট্রি খাতার নিচে রাখা বেশ কিছু ২০ টাকা,৫০ টকা,১০০ টাকার নোট দ্রুত সড়িয়ে ড্রয়ারে ভিতরে রেখে তালা দেন। অভিযুক্ত মিলনের কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করেন। তার পর এই প্রতিনিধির মোবাইলে ধারণ করা টাকা নেয়ার ছবি ও ভিডিও দেখালে সে কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর জানায় জমি ক্রেতা ও বিক্রেতারা জমির দলিল অফিস এন্ট্রি করার করার পর খুশি হয়ে চা-নাসতা করার জন্য কিছু বকসিস দিয়ে খুশি করেন।
এসময় সরকারী অফিসে র্কমচারী হিসেবে এভাবে টাকা নেয়ার কথা জানতে চাইলে অভিযুক্ত মিলন দ্রুত অফিস রুম ত্যাগ করেন, এবং পরবর্তীতে অন্য এক কর্মচারীকে সেখানে খাতায় নাম এন্ট্রি করতে দেখা যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৫-৬জন জমি ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সাথে কথা হলে তারা জানান, মিলন নামের ওই কর্মচারী আমাদের নিকট থেকে জমির দলিল এন্ট্রিতে প্রতি স্বাক্ষর ও টিপসই বাবদ দৈনিক দেড়শো থেকে দুইশোজন জমি ক্রেতা ও বিক্রেতার কাছে থেকে ১০০-১৫০ টাকা করে নিয়ে থাকেন। তবে যারা অনুরোধ করে যে টাকা বেশি নেই সে ক্ষেত্রে কারো কারো নিকট থেকে ৫০ থেকে ৬০টাকা করেও নিয়ে থাকেন। জমি-জমার কাজ মাঝেই মাঝেই থাকে তাই নাম প্রকাশ করতে চাইনি জমি ক্রেতা ও বিক্রেতারা।
এবিষয়ে জেলা রেজিস্ট্রার আব্দুস ছালামের কাছে অফিস নিয়মের বাহিরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের কাছে থেকে টাকা নেয়ার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা যেহেতু সদর উপজেলা সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের ঘটনা তাই এটা নিয়ে আপনারা সদর সাব-রেজিস্ট্রার কর্মকর্তার সাথে কথা বলুন। তবে লিখিত কোন অভিযোগ যদি পাই তবে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
অপরদিকে নওগাঁ সদর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার সাজ্জাদুল কবির জানান, অভিযুক্ত মিলনকে অস্থায়ীভাবে অফিস সহকারী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। হয়তো কোন কোন জমি ক্রেতা-বিক্রেতারা খুশি হয়ে তাকে কিছু টাকা দিয়ে থাকতে পারেন। এভাবে অফিসে নিয়মের বাহিরে টাকা নেয়ার কোন নিয়ম নেই। তবে যেহেতুৃ বিষয়টি আমাকে অবগত করলেন, আমি এবিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো বলে জানান তিনি।