এবার তিতুমীর কলেজের ছাত্ররা গুলশান-১ অবরোধ করলো

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ সাইফুল ইসলাম, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: শুক্রবার ৩১শে জানুয়ারী ২০২৫ ১০:৩৮ অপরাহ্ন
এবার তিতুমীর কলেজের ছাত্ররা গুলশান-১ অবরোধ করলো

সরকারি তিতুমীর কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণার দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন আরও তীব্র হয়েছে। কয়েক মাস ধরে চলা এই আন্দোলনের অংশ হিসেবে বুধবার থেকে আমরণ অনশন শুরু করেন তারা। এবার সেই দাবিতে গুলশান-১ নম্বর সড়কের মোড়ে অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার পর থেকে শিক্ষার্থীরা সেখানে অবস্থান নেন, ফলে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।  


অবরোধের কারণে বিভিন্ন গন্তব্যের যানবাহন আটকে পড়ে, যার ফলে পথচারী ও যাত্রীদের চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি জানান। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে এই দাবিটি জানানো হলেও কোনো সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত আসেনি। অনশনের কারণে ইতোমধ্যে কয়েকজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।  


শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের সাত দফা দাবি বাস্তবায়ন না হবে, ততক্ষণ তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করে একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ, নতুন শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা, শতভাগ আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা কিংবা শিক্ষার্থীদের আবাসন খরচ বহন, আইন ও সাংবাদিকতা বিভাগ সংযোজন, পিএইচডিধারী শিক্ষক নিয়োগ, আসন সংখ্যা সীমিত করে শিক্ষার মান উন্নয়ন এবং আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার প্রতিষ্ঠার জন্য জমি ও বাজেট বরাদ্দ নিশ্চিত করা।  


গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নুরুজ্জামান অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করতে এসে তাদের অনশন প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান। তবে শিক্ষার্থীরা জানান, তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা না করা হলে তারা অনশন চালিয়ে যাবেন। তাদের মতে, এটি শুধু একটি কলেজের দাবি নয়, এটি সারাদেশের উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য জরুরি।  


তিতুমীর কলেজের কয়েকজন শিক্ষক ও অভিভাবক শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন। তারা মনে করেন, শিক্ষার মানোন্নয়নে এ ধরনের উদ্যোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে তারা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে প্রশাসনকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।  


অন্যদিকে, শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধের ফলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টিও সামনে আসছে। কর্মজীবী মানুষ, অফিসগামী ব্যক্তিরা দীর্ঘ সময় যানজটে আটকে থেকে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তবে শিক্ষার্থীরা বলছেন, প্রশাসন দ্রুত সিদ্ধান্ত নিলে সাধারণ মানুষকেও এই দুর্ভোগ পোহাতে হবে না।  


আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন, সরকার যদি দ্রুত কার্যকর সিদ্ধান্ত না নেয়, তবে আন্দোলনের পরিধি আরও বাড়ানো হবে। তারা আরও কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের দাবি মানতে কতটা সময় নেয় প্রশাসন, সেটিই এখন দেখার বিষয়।