আশাশুনির হাট বাজারে বাহারি সেমাই, অধিকাংশই ভেজাল !

নিজস্ব প্রতিবেদক
সচ্চিদানন্দদেসদয়, আশাশুনি উপজেলা প্রতিনিধি, সাতক্ষিরা
প্রকাশিত: সোমবার ৮ই এপ্রিল ২০২৪ ০৮:১১ অপরাহ্ন
আশাশুনির হাট বাজারে বাহারি সেমাই, অধিকাংশই ভেজাল !

ঈদে খাবারের মধ্যে সেমাইকে বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়।  সেমাইর দাম তুলনামূলক কম থাকায় সব শ্রেনীর মানুষের কাছে এটিই বেশি প্রিয়। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে নিম্নমানের ও ভেজাল সেমাইয়ে সয়লাব আশাশুনি প্রসিদ্ধ হাট বাজার সহ গ্রাম গঞ্জের বিভিন্ন দোকান গুলো।।


আশাশুনির পাড়া-মহল্লার দোকান থেকে শুরু করে বড় বড় দোকানগুলোতে নানা ধরনের সেমাই উঠানো হয়েছে। তবে এরমধ্যে ভেজাল সেমাই বেশি। ফলে এসব বিক্রিয়ও হচ্ছে প্রচুর। আর এ সেমাই তৈরি হচ্ছে মেয়াদউত্তীর্ণ আটা, ডালডা, চর্বি জাতীয় তৈলাক্ত পদার্থ দিয়ে। ভোক্তারা না জেনে এসব ভেজাল সেমাই খেয়ে নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। 


জানা গেছে, ঈদ বা উৎসবে বাসা বাড়িতে নানা ধরনের মিষ্টি পরিবেশন করা হয়। এরমধ্যে সবার পছন্দ নানা ধরনের সেমাই। ফলে প্রতি ঈদ বা বিভিন্ন উৎসবে সেমাইর চাহিদা বেশি থাকে। খোলা এসব সেমাই তুলনামূলকভাবে কম দামে বিক্রি হওয়ায় নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা এসব সেমাই বেশি কেনেন।  চিকিৎসকদের মতে, এসব সেমাইয়ে ব্যবহৃত উপাদান শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এখনই এসব সেমাই বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ তৈরি বন্ধ না করতে পারলে এ ভেজাল সেমাই দিয়েই ঈদ করতে হবে গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ নাগরিককে। 


আশাশুনির বুধহাটা,বড়দল,আশাশুনি সদর,পাইথলী বাজারের বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা গেছে, প্যাকেট সেমাইয়ের পাশাপাশি দোকানদাররা কম দামের বিভিন্ন ধরনের খোলা সেমাইও রাখছেন বিক্রির জন্য।  কম দাম হওয়ায় ক্রেতারা এসব সেমাইয়ের প্রতি ঝুঁকছেন বেশি। ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা কম দামে কিনে বেশি ব্যবসা করতে পারে বলে এসব সেমাই বিক্রি করছে। আর ভালো সেমাই লাভ কম হয় বলে তারা কম বিক্রি করে। 


জানা গেছে,নিম্নমানের  এসব সেমাই তৈরি করা হয় মেয়াদউত্তীর্ণ আটা, ডালডা, চর্বি জাতীয় তেল এবং নিম্নমানের পামওয়েলের সাথে গাড়িতে ব্যবহৃত মবিল দিয়ে। এ সেমাই খেলে নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এমন আশঙ্কা চিকিৎসকদের। এছাড়া, নামীদামি কোম্পানির সেমাই প্যাকেট হুবহু নকল করেও নকল সেমাই প্যাকেট জাত করে বিক্রির হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, কিছু কোম্পানি বিএসটিআইয়ের অনুমোদন নিয়ে সেমাই তৈরি করলেও অধিকাংশ কারখানাতে সেমাই তৈরির অনুমোদন নেই।


 তবে ক্রেতাদের অনেকে অভিযোগ করেন যেসব সেমাই কারখানার বিএসটিআইয়ের অনুমোদন নেই এসব কারখানায় ভেজাল সেমাই তৈরি বেশি হয়। তাই এসব মানুষের দাবি সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন এসব ভেজাল সেমাইর কারখানা বন্ধ করে দেয়। না হয় শুধু ঈদেই নয় সারা বছরই এসব নিম্নমানের সেমাই খেতে হবে সাধারণ মানুষের। 


নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক দোকানদার জানান, প্যাকেট জাত সেমাই বিক্রি করলে বেশি লাভ হয় না। ফলে আমরা খোলা সেমাই বেশি বেক্রি করি। আর প্যাকেট জাত সেমাইর দাম বেশি হওয়ায় বেশিরভাগ ক্রেতা খোলা সেমাই বেশি ক্রয় করছে। তবে খোলা সেমাইয়ে ভেজাল আছে কি না এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেনা। সেমাই কিনতে আসা এক খরিদ্দার বলেন, ঈদ বা যে কোন উৎসবে মিষ্টি জাতীয় খাবারের মধ্যে আমরা সেমাইকে বেশি প্রাধান্য দেই। 


কিন্তু বাজারে গেলে দোকানগুলোতে নানা ধরনের সেমাই দেখা যাচ্ছে। এসব দেখে মনে হয় মেয়াদ উত্তীর্ণ আটা, ডালডা, চর্বি এবং নিম্নমানের পামওয়েলের দিয়ে তৈরি করা। কিন্তু প্যাকেট জাত সেমাইর থেকে দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় বিষয়টি অনেকে না জেনেই ক্রয় করছে। ফলে এ অস্বাস্থ্যকর সেমাই বিক্রি ও বাজারজাতকরণ বন্ধ করতে হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি  আরো বাড়ানো উচিত বলে মনে করছেন আশাশুনি উপজেলা বাসি।