গাংনীতে স্কুল বিল্ডিং ভেঙ্গে বিক্রি করার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
এস এম তারেক হোসেন, জেলা প্রতিনিধি মেহেরপুর
প্রকাশিত: বুধবার ১লা মে ২০২৪ ০৩:৫৪ অপরাহ্ন
গাংনীতে স্কুল বিল্ডিং ভেঙ্গে বিক্রি করার অভিযোগ

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা তেঁতুলবাড়িয়া ইসলামিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় এর একটি একতলা ও দোতলা বিল্ডিং ভেঙ্গে বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন এর বিরুদ্ধে। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দিলেও কোন প্রকার ব্যবস্থা নেননি উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা।


জানা গেছে, এলাকার মানুষের শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে ১৯৮৩ সালের তেঁতুলবাড়িয়া ইসলামিয়া মাধ্যমিক তৎকালীন চেয়ারম্যান নুরুল হুদা বিশ্বাস এই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে বিদ্যালয়েরটিতে প্রায় ১২০০ শিক্ষার্থীর লেখাপড়া করছে। শিক্ষা প্রসারের জন্য সরকার কর্তৃক নতুন বিদ্যালয় ভবনের অনুমতি পাই বিদ্যালয়টি। গত ০৫/০৩/২৪ ইং তারিখে বিদ্যালয়ের দুটি ভবন নিলামের জন্য এলাকায় মাইকিং করা হয়। নিলামের জন্য মাইকিং করা হলেও কিন্তু নিলাম করেননি সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক। রাতের আঁধারেই বিদ্যালয়ে ভবন ভেঙে প্রয়োজনীয় মালামাল বিক্রি করে দেয় প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি এ নিয়ে ক্ষোভ এলাকাবাসীর। 


লিখিত অভিযোগে মনায়ারুল ইসলাম জানান, কোন প্রকার দরপত্র ছাড়া বিল্ডিং ভাঙছে এ নিয়ে আমি গত ১২/০৩/২৪ তারিখে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করলেও তিনি কোন প্রকার ব্যবস্থা নেননি। এ নিয়ে দ্বিতীয়বার আমি ২৮/০৪/২৪ তারিখে লিখিত অভিযোগ করলেও কোন প্রকার তদন্তভার গ্রহণ করেননি উপজেলা নির্বাহী অফিসার। তিনি আরো বলেন,উপজেলা নির্বাহী অফিসার, প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির জোকসাজসে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার ওই ভবনের মালামাল মাত্র ৭০ হাজার টাকায় রাতের আধারে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে।  


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক এলাকাবাসী জানান, প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি ক্ষমতাশালী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে চান না এলাকাবাসীর অনেকেই। কোন প্রকার টেন্ডার ছাড়াই সরকারি প্রতিষ্ঠান বিক্রি করে নিজেরাই অর্থ আত্মসাৎ করেছে বলে দাবি করেন এলাকার লোকজন। এ ঘটনায় সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককে আইনের আওতায় দাবিও জানান তারা।

  

 

তেঁতুলবাড়িয়া ইসলামিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রশাসকের সমন্বয়ে বিল্ডিং ভাঙ্গা হয়েছে। তবে কেউ লিখিতভাবে অনুমোদন না দিলেও মৌখিকভাবে অনুমোদন দিয়ে ভাঙ্গার নির্দেশনা দিয়েছেন। তাদের নির্দেশনা মোতাবেক আমরা একটি সমন্বয় কমিটি তৈরি করে বিল্ডিং ভেঙেছি ও প্রয়োজনীয় মালামাল বিক্রি করা হয়েছে যা সভাপতি জানে। সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, প্রতিষ্ঠান আমার,কার নির্দেশে টেন্ডার করবো, ইচ্ছা হয়েছে ভেঙে ফেলেছি।


তেঁতুলবাড়িয়া ইসলামিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ইউএনও স্যারের সাথে কথা বলে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিল্ডিং ভাঙ্গা হয়েছে। বিদ্যালয় এর কোন মালামাল বিক্রি করা হয়নি। আর বিদ্যালয়ের ভাঙ্গার সব কথা ইউএনও স্যার জানেন।


গাংনীর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে মোবারক জানান, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভেঙে বিক্রি করতে হলে অবশ্যই টেন্ডার করতে হবে। ম্যানেজিং কমিটির রেজুলেশনের মাধ্যমে ভাঙার কোন সুযোগ নেই। তবে বিষয়টির খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা অভিযোগের কপি হাতে পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করলেও, কোনো প্রকার বক্তব্য দিতে রাজি হননি। মেহেরপুর জেলা প্রশাসক শামীম হাসান জানান, সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান টেন্ডার ছাড়া বিক্রি করার সুযোগ নেই। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।