আমরা ‘ব্রিজ-সেতুর স্বপ্ন দেখি, বাস্তবে নয়!

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ২১শে জানুয়ারী ২০২১ ০২:৩৫ অপরাহ্ন
আমরা ‘ব্রিজ-সেতুর স্বপ্ন  দেখি, বাস্তবে নয়!

আমরা স্বপ্ন দেখি ‘ব্রিজ-সেতু, বাস্তবে নয়। জানি না এ স্বপ্ন বস্তবে কোনদিন রূপনিবে কী-না। কারণ এখানে বছরের ৬ মাস পানি থাকে এবং বাকী ৬ মাস বাঁশেরসাকোতে পারাপার হতে হয়। অর্থাৎ বছরের কার্তিক মাসে তৈরি করা হয় বাঁশের সাকো।

তাও আবার বর্ষা আসলেই নদীর পানির  ভেসে যায়। বছরের পর বছর ধরে এরকমদূর্ভোগ ও ভোগান্তি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে শত শত মানুষকে। ’কথাগুলো বলছিল যশোর

ক্যান্টনমেন্ট কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাইবা খাতুন। সে তৈলকূপী গ্রামের সহিদুল ইসলামের কন্যা। সে প্রতিদিন ঐ ভাঙ্গাচোরা বাশেঁর সাকোঁ দিয়ে

পার হয়ে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের নিয়ামতপুর ইউনিয়নের বারোপাখিয়া মসজিদের মোড়েএসে তাকে ইজি বাইক, ভ্যান অথবা লাটা হাম্বারে চড়ে কালীগঞ্জ পৌছায়ে তারপর বাসে

চেপে তাকে যশোর যেতে হয়। সে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ২ নং জামাল ইউনিয়নেরতৈলকূপী গ্রামের তিন দিক দিয়ে বয়ে চলা বেগবতী নদীর কথা বলছিল। এ নদী পারাপারের

একমাত্র ভরসা বর্ষার সময় তালের নৌকা (ডুঙ্গা) আর এখন একটি বাঁশের সাকোঁ। তাওআবার বর্ষা আসলেই নদীর পানির স্ধসঢ়;্েরাতে ভেসে যাবে। ফলে বছরের ছয় মাস সাকো

দিয়ে এবং বাকি ছয় মাস ডুঙ্গা দিয়ে এ নদী পারাপর হতে হয় তিন ইউনিয়নের কয়েকগ্রামের শত শত মানুষকে। এতে চরমভোগান্তি আর দুর্ভোগে পোহাতে হয় ওই অঞ্চলের

বাসিন্দাদের। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের জামাল ও নিয়ামতপুর ইউনিয়নের এসবএকালাকাবাসীদের প্রাণের দাবি তৈলকূপী দক্ষিনপাড়া ও বারোপাখিয়া গ্রামের উপর দিয়েবয়ে যাওয়া বেগবতী নদীর উপর একটি ব্রিজের প্রয়োজনের কথা। বলরামপুর, মহেশ^রচাদা,


নিয়ামতপুর, বারোপাখিয়া, কাশিমা, তৈলকূপী, নলডাঙ্গা, দূর্গাপুর ও খড়াশুনিসহআশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের শতশত মানুষের চলাচলের জন্য এ নদী ব্যবহার করতে হয়।যেখানে এ নদীর উপর নেই কোন ব্রিজ। তৈলকূপী


গ্রামবাসীরা নিজ উদ্যোগে বাঁশদিয়ে সাকো তৈরী করে দেয়া হয়েছে। তাও আবার ছয় মাসের জন্য। কারণ ছয় মাস পরেই এসাকো থাকে না। তখন এ নদী পারাপারের একমাত্র ভরসা হয় ২ থেকে ৩ জন পার হওয়ার মতোডুঙ্গা। এলাকায় গিয়ে বিভিন্ন বয়সের লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, চরম

দূর্ভোগ ও ভোগান্তি শিকার হাজার হাজার মানুষ নদী পারাপারের জন্য একমাত্র ভরসা বাঁশেরসাকো। আবার এ সাকো নির্মাণের ছয় মাস যেতে না যেতেই তা নদীর পানির ভেঙ্গে যায়। ডুঙ্গায় পারপার হতে গিয়ে অনেকেই নদীর পানিতে


পড়ে গিয়েআহত হয়েছে। স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা তাদের বই পুস্তুক নিয়ে নদীর পারাপার হতেগিয়ে অনেকেই নদীতে পড়ে গিয়েছে। ফলে তাদের বই খাতা ভিজে যাওয়ায় স্কুল ওমাদ্রাসায় যাওয়া অসম্ভব হয়ে দাড়িয়েছে। এদিকে, অনেকেই ক্ষোভ নিয়ে জানান,

নির্বাচন এলেই জনপ্রতিনিধিরা এ নদীর উপর দিয়ে চলাচলরত মানুষের দুর্ভোগ লাঘবকরার জন্য প্রতিশ্রুতি দেয় একটি ব্রিজ নির্মাণের। কিন্তু নির্বাচন শেষ হলে কেউআর খবর রাখে না। নদী পার হয়ে নিয়ামতপুর ইউনিয়নের ঘোষনগর


এলাকায় রয়েছে একটিসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি উচ্চ বিদ্যালয়। এসব স্কুলে রয়েছে কয়েক হাজারশিক্ষার্থী। এলাকার শিক্ষার্থীরা জানায়, বেগবতী নদীর উপর বাঁশের এ সাকো দিয়ে তাদের

প্রত্যেকদিন স্কুলে আসতে হয় এবং বাড়ি যেতে হয়। বাঁশের সাকো আবার বর্ষার দিনআসলেই ভেঙে যায়। ফলে সে সময় এ নদী পারাপারের একমাত্র বাহন হলো ডুঙ্গা। এ নদীর উপর


একটি ব্রিজের খুবই দরকার। ব্রিজ হলে সকলের মনের আশাপূরণ হবে। সকলেই নিরাপদেএবং স্বাচ্ছন্দে এ নদীপার হতে পারবে। তা-না হলে ব্রিজ-সেতু স্বপ্নের মতই রয়ে যাবে।

তবে আমাদের দাবি ব্রিজ আমরা আর স্বপ্ন দেখতে চাইনা। আমরা বাস্তবে এ নদীর উপরব্রিজ দেখতে চাই। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি রয়েছেন তারা অবশ্যই যেন


বিষয়টি নজরেনিয়ে সকলের দুঃখ দূর করবেন। এভাবেই বছরের পর বছর এ নদীর উপর একটি ব্রিজের স্বপ্নদেখে এ অঞ্চলের লোকজন। চোখে স্বপ্ন নিয়ে চরম দুর্ভোগ আর ভোগান্তির মধ্যে পারাপার