ইসলামে প্রতারণা বা ধোকা হারাম। হারাম কাজের গোনাহ অনেক বড়। যাকে কবিরা গোনাহ বলা হয়। প্রতারণা করলে শুধু গোনাহ হয় এমনটি নয়, বরং সে ব্যক্তিকে উম্মত হিসেবে স্বীকৃতি দেবেন না বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
বর্তমান সময়ে জীবন চলার প্রতিটি ক্ষেত্রেই মানুষ কম-বেশি ধোকা বা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে থাকে। শিক্ষা, চাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্য এমন কোনো ক্ষেত্র বাদ নেই, যেখানে ধোকা বা প্রতারণা চলে না।
ধোকা বা প্রতারণা সময়ের সবচেয়ে বড় মহামারি। এ থেকে উত্তরণে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একটি কথাই যথেষ্ট। তিনি বলেছেন- ‘যে প্রতারণা করে বা ধোঁকা দেয়, সে আমার উম্মতের মধ্যে গণ্য হবে না।’
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একটি খাদ্যশস্যের স্তূপ অতিক্রম করে যাওয়ার সময় তাতে হাত ঢুকিয়ে (স্তূপের) ভেতরে ভেজা অনুভব করলেন। তখন তিনি স্তূপের মালিককে জিজ্ঞাসা করলেন, হে স্তূপের মালিক! এটি এমন কেন?
উত্তরে স্তূপের মালিক বলল, ‘হে আল্লাহর রাসূল! বৃষ্টির কারণে এরূপ হয়েছে।
এ কথা শুনে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন-
‘তুমি ভেজা শস্য উপরে রাখলে না কেন? তাহলে তো ক্রেতাগণ (যারা এ শস্য কিনে নেবে)- এর (প্রকৃত) অবস্থা দেখতে পেত। অর্থাৎ প্রতারিত হতো না। যে প্রতারণা করে বা ধোঁকা দেয়, সে আমার উম্মতের মধ্যে গণ্য হবে না।’ (মুসলিম, মিশকাত)
মুমিন মুসলমানের জন্য কত বড় বিপদের কথা!
ব্যক্তি ছোট কিংবা বড় হোক, ধোকা বা প্রতারণার সঙ্গে যে ব্যক্তি জড়িয়ে পড়বে, সে ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উম্মত হিসেবে স্বীকৃতি পাবে না। নাউজুবিল্লাহ।
এ কারণেই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতারণামূলক যে কোনো কাজ করতেই নিষেধ করেছেন। হাদিসে উল্লেখিত ঘটনাই এর জলন্ত প্রমাণ।
তাছাড়া ধোঁকা বা প্রতারণায় রয়েছে অনেক ক্ষতি। আর তাহলো-
>> প্রতারণা মানুষকে জাহান্নামের পথে ঠেলে দেয়, নিক্ষেপ করে তার ভয়াবহ ও স্থায়ী আগুনে।
>> ধোকা বা প্রতারণা ব্যক্তির আত্মিক নিচুতা ও মানসিক কলংকের পরিচায় বহন করে। সুতরাং চরম নিচু মানসিকতার লোকই কেবল তা করে থাকে এবং স্থায়ী ধ্বংসে পতিত হয়।
>> ধোকা বা প্রতারণামূলক কাজ বান্দাকে আল্লাহ ও মানুষ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়।
>> ধোকা বা প্রতারণা বান্দার দোয়া কবুলের পথে প্রতিবন্ধক।
>> ধোকা বা প্রতারণায় বান্দার হায়াত এবং সম্পদের বরকত নষ্ট করে দেয়।
>> ধোকা বা প্রতারণায় মানুষের ঈমান দুর্বল হয়ে যায়।
যেখানে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতারক ব্যক্তিকে তার উম্মত হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না। একজন মুমিন বান্দার জন্য এর চেয়ে বড় ক্ষতিকর বিষয় আর কী হতে পারে? আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রতারণামূলক কিংবা ধোকা সম্পর্কিত যে কোনো কাজ থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।