ইসলাম পূর্ব অন্ধকার যুগের এমন কিছু কাজ আছে যেগুলো মুসলমানরা এখনও করে থাকেন। অথচ এসব কাজের ব্যাপারে কঠোর হুশিয়ারি রয়েছে। এরমধ্যে অন্যতম হলো- মানুষের মৃত্যুর পর মাতম বা বিলাপ করা এবং নিজ নিজ বংশ নিয়ে গর্ব করা। যা ইসলামে একেবারেই নিষিদ্ধ। এ সবের শাস্তিও মারাত্মক। জাহেলিয়াতের ৪ কাজ ও এর পরিণতি কী?
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আমার উম্মতের মাঝে ৪টি কাজ হলো জাহেলিয়াতের প্রথা; যা তারা ত্যাগ করবে না। তাহলো-
১. বংশ নিয়ে গর্ব করা
২. বংশসূত্রে খোঁটা দেওয়া
৩. নক্ষত্রের মাধ্যমে বৃষ্টির আশা করা
৪. মৃত মানুষের জন্য মাতম করা। (হাদিস সম্ভার, মুসলিম, ইবনে মাজাহ)
হাদিসের বিখ্যাত গ্রন্থ ইবনে মাজাহতে একাধিক হাদিসে জাহেলিয়াতের এসব রীতির ব্যাপারে কঠোর সতর্কবাণী উল্লেখ করা হয়েছে। তাহলো-
১. হজরত উম্মু সালামাহ রাদিয়াল্লাহু আনহা নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বরাতে বলেন- (وَلَا يَعْصِينَكَ فِي مَعْرُوفٍ) ’তারা উত্তম কাজে তোমাদের অমান্য করবে না’ (সুরা মুমতাহিনা : আয়াত ১২), এর অর্থ ’বিলাপ করবে না’। (ইবনে মাজাহ)
২. হজরত মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহুর মুক্ত দাস জারীর রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, হজরত মুআবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু হিমস নামক স্থানে ভাষণ দানকালে তার ভাষণে উল্লেখ করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিলাপ করে কাঁদতে নিষেধ করেছেন।’ (ইবনে মাজাহ)
৩. হজরত আবু মালিক আল-আশআরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘বিলাপকারিণী তওবা না করে মারা গেলে, আল্লাহ তাআলা তাকে আলকাতরা যুক্ত কাপড় এবং লেলিহান শিখার বর্ম পরাবেন।’ (ইবনে মাজাহ, মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ, তালিকুর রাগিব)
৪. হজরত ইবনু আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন মৃতের জন্য বিলাপ করে কান্নাকাটি করা জাহিলী প্রথা। অতএব যে বিলাপকারিণী মৃত্যুর আগে তওবা করেনি, কেয়ামতের দিন তাকে আলকাতরা যুক্ত জামা পরিয়ে উঠানো হবে, এরপর তাকে লেলিহান শিখার বর্ম পরানো হবে।’ (ইবনে মাজাহ)
৫. হজরত ইবনু ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, কোনো লাশের সঙ্গে বিলাপকারিণী থাকলে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে অনুসরণ করতে নিষেধ করেছেন।’ (ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমাদ)
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনেক হাদিসে জাহেলিয়াতের প্রথার অনুসরণ ও অনুকরণ করতে নিষেধ করেছেন। এসবই জাহেলিয়াতের রীতি-নীতি। এসবের অনুসরণ ও অনুকরণ মারাত্মক অপরাধ ও গুনাহের কারণ।আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উল্লেখিত চারটি অভ্যাস থেকে মুক্ত থাকার মাধ্যমে নবিজীর হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।