বিএনপির সমর্থক কখনোই ছিলাম না: ড. কামাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: শুক্রবার ৪ঠা অক্টোবর ২০১৯ ০৩:২৮ অপরাহ্ন
বিএনপির সমর্থক কখনোই ছিলাম না: ড. কামাল

‘আমি কখনোই বিএনপির সমর্থক ছিলাম না’— কথাটি বলেছেন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপিকে নিয়ে গঠিত নির্বাচনি জোট ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের’ প্রধান উদ্যোক্তা গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন। শুক্রবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ‘বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে জাতীয় সরকার গঠনের অপরিহার্যতা’ শীর্ষক এ আলোচনা সভা আয়োজন করে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি)।

আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জেএসডি’র সভাপতি আ স ম আব্দুর রব। আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) সভাপতি মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিম, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী, বাম নেতা সাইফুল হক, জেএসডি’র সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতনসহ অন্যরা।

মনিরুল হক চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমি আমার দলের প্রতিনিধি হিসেবে এখানে এসেছি। আসার আগে দলের সঙ্গে কথা বলেছি। দল আমাকে এখানে আসার অনুমতি দিয়েছে। আপনারা যাই করেন না কেন, জাতীয় সরকার গঠনের করতে চান কেন, সব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিটা যোগ করতে হবে। নইলে বিএনপিকে খুব একটা পাশে পাবেন না।’ মনিরুল হক চৌধুরীর বক্তব্যের পর বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিম বক্তব্য দেন। তিনিও সর্বাগ্রে খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি তুলে ধরেন।


এরপর বক্তব্য দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম সহচর, সংবিধান প্রণেতা, আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা, গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন। টানা ২৪ মিনিটের বক্তব্যে একটি বারের জন্যও তিনি খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি উল্লেখ করেননি বরং প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেছেন, ‘আমি কোনোদিন বিএনপির সমর্থক ছিলাম না।’ ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘এই যে ক্যাসিনো, এই ক্যাসিনো যে এই আকারে আছে, এটা কী করে হলো? মানে এটা কী করে ভাববেন যে, সব কিছুই...বিএনপি করে গেছে। আমি তো কোনোদিন বিএনপির সমর্থক ওইভাবে ছিলাম না। আমি বিএনপির বিরোধিতা করে আসছি। তো কথা হল যে, বিএনপিই সব করেছে...কিন্তু গত ১০ বছর তো বিএনপি ছিল না। এখন এগুলো নিয়ে বিএনপিকে দোষ দেওয়া যায় কি? ’

‘যায় হয়তো! গত ১০ বছরে যেসব অসম্ভব কাজ তারা (আওয়ামী লীগ) করেছে, দশ বছরে দেশে যেসব ঘটনা ঘটেছে, তার ক্রেটিড তারা দিতে চায় বিএনপিকে। বিএনপি অতীতে অনেক কিছু করতে পারে। কিন্তু গত দশ বছর ক্ষমতায় না থেকে সব কিছু তারা করেছে, এটা বলা কী ঠিক। সুতরাং আমাদের কিছুটা বুঝতে হবে এ অভিযোগটার গ্রহণযোগ্যতা নাই’— বলেন ড. কামাল হোসেন। সরকারের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘দেশের অবস্থা নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন। আমি তো মনে করি উদ্বিগ্ন না হওয়ার কথা না। এমনকি সরকারি দল যারা করেন, তাদের মধ্যে অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।’

ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘নেতিবাচক কথা বলে আমরা এখান থেকে চলে যাব, এতে কোনো অগ্রগতি আনবে না। এই সরকারকে প্রত্যাখান করেছি। প্রত্যাখান করতে বাধ্য হয়েছি কর্মকাণ্ডের জন্য। কিন্তু এটা করে তো কোনো লাভ হবে না। যেটা প্রয়োজন সেটা হল- জনগণের ঐক্য, সর্বদলীয় ঐক্য। এই ঐক্য’র শিক্ষা আমরা বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে পেয়েছিলাম। তিনি আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার শিক্ষা দিয়েছিলেন, ঐক্যের ব্যাপারে আমাদেরকে জাগিয়ে তুলেছিলেন।’ সভাপতির বক্তব্যে আ স ম আব্দুর রব বলেন, ‘এখন ক্যাসিনো নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে, হৈ চৈ হচ্ছে। কিন্তু সব চেয়ে বড় ক্যাসিনো হয়ে গেছে ২৯ ডিসেম্বর রাতে। সেই রাতের ক্যাসিনোতে গোটা জাতিকে হারিয়ে দিয়েছে এই সরকার।’

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব