"ফ্যাসিবাদী শক্তি আনসার লীগ, ইসকন লীগ রূপে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চেয়েছিল"

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, দেশের অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির জন্য পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তি বারবার নানা সংগঠন রূপে আবির্ভূত হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, এসব শক্তি কখনো আনসার লীগ, কখনো রিকশা লীগ, কখনো চাকরি লীগ আবার কখনো ইসকন লীগ হিসেবে ফেরার চেষ্টা করেছে, তবে ধর্মীয় দাঙ্গার ষড়যন্ত্রে তাদের পরিকল্পনা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে। দেশের জনগণ, ধর্ম-বর্ণ, দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এসব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করেছে।

শুক্রবার সিলেট মহানগরীর সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ডা. শফিকুর রহমান তার বক্তব্যে আরও বলেন, “আমরা চাঁদাবাজি এবং দুর্নীতির সাথে কখনো জড়িত হবো না, বরং জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।” তিনি দেশের নাগরিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আমরা ছাত্র-জনতার স্বপ্নের সাম্যের বাংলাদেশ গড়তে চাই।”

জামায়াত আমির এ সময় ২০০৬ সালের লগি-বৈঠা আন্দোলনের কথা স্মরণ করেন, যেখানে আওয়ামী লীগ একটি বর্বর দল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিল। তিনি দাবি করেন, আওয়ামী লীগ দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে ‘বর্বর’ ও ‘আগ্রাসী’ শক্তি হিসেবে গণধিকৃত হয়েছে এবং জনগণের মধ্যে তাদের প্রতি এক ধরনের বিতৃষ্ণা তৈরি হয়েছে। তার মতে, যদি শহিদদের এবং আহতদের পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞেস করা হয়, তবে তারা স্পষ্টভাবে আওয়ামী লীগের অপকর্মের ইতিহাস তুলে ধরবেন।

ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, "ফ্যাসিস্ট শক্তির ষড়যন্ত্র ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট করার জন্য হলেও তা নস্যাৎ হয়েছে এবং বাংলাদেশের জাতীয় ঐক্য আরো সুদৃঢ় হয়েছে। জামায়াত কোনো অপশক্তির কাছে মাথা নত করেনি, কেবল আল্লাহর কাছে মাথা নত করেছে। এর ফলস্বরূপ ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান ঘটেছিল, যার মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী শক্তির পতন নিশ্চিত হয়।”

সিলেট জেলা জামায়াত আমির মাওলানা হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মী সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, ঢাকা উত্তর জামায়াতের আমির সেলিম উদ্দিন, সিলেট মহানগর জামায়াতের আমির ফখরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক ফজলুর রহমান, সুনামগঞ্জ জেলা আমির মাওলানা তোফায়েল আহমদ খান, মৌলভীবাজার জেলা আমির শাহেদ আলীসহ অন্যান্য নেতারা বক্তব্য রাখেন। 

এ সভায় জামায়াতে ইসলামীর নেতারা দেশ ও জাতির স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকার এবং আগামী দিনের রাজনৈতিক আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।