শৈলকুপায় কলেজ সভাপতির সাক্ষর জাল করে ২৯ নিয়োগ! ফুসে উঠেছে শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
আতিকুর রহমান, জেলা প্রতিনিধি, ঝিনাইদহ
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ২৯শে আগস্ট ২০২৪ ০৭:৪৫ অপরাহ্ন
শৈলকুপায় কলেজ সভাপতির সাক্ষর জাল করে ২৯ নিয়োগ! ফুসে উঠেছে শিক্ষার্থীরা

ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার ভাটই বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ডিগ্রী কলেজে সভাপতির সাক্ষর জাল করে ব্যাকডেটে ২৯ জনকে অবৈধ ভাবে নিয়োগ দিয়ে প্রায় ১০ কোটি টাকার নিয়োগ বানিজ্যের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ফুঁসে উঠেছে ওই কলেজের শিক্ষার্থীরা। 


বৃহস্পতিবার দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের উপস্থিতিতে সাধারণ শিক্ষর্থীরা বিক্ষোভ মিছিলসহ অধ্যক্ষের অফিস ঘেরাও করে। তারা অধ্যক্ষ আ.খ.ম মামুনুর রশিদ ও উপাধ্যক্ষ আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে কলেজ ফান্ডের টাকা তছরুপ, নিয়োগ বানিজ্য, জাল জোচ্চুরিসহ একাধিক অভিযোগ তোলেন। শিক্ষার্থীদের পক্ষে এ সংক্রান্ত অভিযোগ পাঠ করে শোনান কলেজ ছাত্র সাব্বির হোসেন। 


এ সময় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ঝিনাইদহ জেলার সমন্বয়ক আবু হুরায়রা ও রিহান হোসেন রায়হান উপস্থিত ছিলেন। অভিযোগ উল্লেখ করা হয়, শৈলকুপার আ’লীগ নেতা প্রয়াত সোনা শিকদার ও তার ছেলেদের ভয় দেখিয়ে অধ্যক্ষ আ.খ.ম মামুনুর রশিদ ও উপাধ্যক্ষ আশরাফুল ইসলাম কলেজটিতে ত্রাসের রাম রাজত্ব কয়েম করে। তাদের ভয়ে কোন শিক্ষক ও কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করতে সাহস পায়নি। 


২০১৯ সালে মৃত ও অন্য কলেজে চলে যাওয়া ডিগ্রি শিক্ষকের পদে ব্যাকডেটে ২০১৫ ও ২০১৮ সালে শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে ৬০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। কলেজের প্রয়াত সভাপতি সাবেক এমপি আব্দুল হাইয়ের সাক্ষর জাল করে অধ্যাক্ষ ও উপাধ্যক্ষ টিউশন ফির ১২ লাখ টাকা পকেটস্থ করেছেন। করোনাকালীন সময়ে সরকার থেকে ফেরতকৃত এইচএসসি শিক্ষার্থীদের কেন্দ্র ফির এক লাখ ৬০ হাজার টাকা পরীক্ষার্থীদের ফেরৎ না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন।


 হাসানুজ্জামান নামে এক ব্যক্তিকে নিয়োগ দিয়ে তার কাছ থেকে নেওয়া টাকা ফান্ডে জমা না দিয়ে অধ্যক্ষ আ.খ.ম মামুনুর রশিদ ও উপাধ্যক্ষ আশরাফুল ইসলাম আত্মসাৎ করেছেন। কলেজ জাতীয়করণের পরে ফান্ডের উপর সরকারী নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরও দুজন মিলে লাখ লাখ টাকা ভাগাভাগি করে নিয়েছেন বলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা দাবী করেন। 


২০২৩ সালের ২৩ জুন বৈধ নিয়োগ বোর্ডের জাতীয় পত্রিকা, মূল কপি টেম্পারিংসহ সভাপতির সাক্ষর জাল করে ২৯ জন গোপনে নিয়েগ দিয়ে ৬ কোটি টাকার নিয়োগ বানিজ্য করেন অধ্যক্ষ আ.খ.ম মামুনুর রশিদ ও উপাধ্যক্ষ আশরাফুল ইসলাম। ফলে প্রায় ১৪ থেকে ১৫’শ শিক্ষার্থী সমৃদ্ধ কলেজটি অর্থনৈতিকভাবে দেওলিয়া হয়ে পড়েছে।


 এছাড়া অধ্যক্ষের নিজে ১৯৮৯ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় কম্পার্টমেন্টাল পেয়ে পাশ করেন। তিনি অনার্সে না পড়েই আ’লীগের প্রভঅব খাটিয়ে অধ্যক্ষ হয়ে কলেজটি লুটপাটের আখড়ায় পরিণত করেছে বলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন। 


এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ আ.খ.ম মামুনুর রশিদ ও উপাধ্যক্ষ আশরাফুল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে দু’জনার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।