জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে (জবি) কে হেয় প্রতিপন্ন করে ভিসির দেয়া বক্তব্য প্রত্যাহারে দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষকদের মধ্যে থেকে ভিসি ও ট্রেজারার নিয়োগ দেয়ারও কথা বলেছেন তারা।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এ মানববন্ধন ও পরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এসময় তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা। তিনি জবির উপাচার্য হওয়ার পরও নিজেকে ঢাবির শিক্ষক হিসেবে দাবি করেন, তাহলে তিনি ঢাবিতেই চলে যাক। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে মনে ধারণ করেন না, তাহলে তিনি কেন জবির ভিসি পদে বহাল থাকবেন। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা আগামী রবিবারের মধ্যে উপাচার্যের বক্তব্য প্রত্যাহার করে, গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যার জন্য সময় বেঁধে দেন। যদি বক্তব্য প্রত্যাহার না করেন তাহলে আরও কঠোর কর্মসূচি নেওয়ার কথাও জানান তারা।
সম্প্রতি গণমাধ্যমকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ভিসি বলেছেন, তিনি জবিতে চাকরি করেন না, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করেন। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অমান্য করে ড. মীজানুর রহমান ভিসি থাকার গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছেন। আগামী রোবারের মধ্যে তার বক্তব্য প্রত্যাহার করে গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যার জন্য সময়ও বেঁধে দেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, চলতি মাসের গত ১৬ই অক্টোবর বেসরকারি যমুনা টেলিভিশনে এক টকশোতে কথা প্রসঙ্গে ভিসি বলেন, যুবলীগের দায়িত্ব পেলে তিনি ভিসি পদ ছেড়ে দেবেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হলেও তিনি এখনো যুবলীগের সভাপতিন্ডলীর এক নম্বর সদস্য এবং আওয়ামী লীগ সভানেত্রী (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) যদি দায়িত্ব দেন তাহলে তিনি ভিসি পদ ছেড়ে দিয়ে যুবলীগের পদে দায়িত্ব পালন করবেন।
কিন্তু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৫ অনুযায়ী ৮ নাম্বার ধারায় লেখা আছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, ডীন, বিভাগীয় প্রধান, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, পরিচালক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্ব থাকবেন। সে হিসেবে ভিসি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তা। এই আইনের ৪৪ নম্বর ধারার চার নম্বর উপ-ধারায় উল্লেখ আছে- বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা বা কর্মচারি কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সদস্য হতে পারবেন না। মানববন্ধনে মার্কেটিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জহির রায়হান বলেন, জবির ভিসি হওয়ার পরও নিজেকে ঢাবির শিক্ষক হিসেবে দাবি করেন, তাহলে তিনি ঢাবিতেই চলে যাক। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে মনে ধারণ করেন না, তাহলে তিনি কেন জবির ভিসি পদে বহাল থাকবেন? পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তৌসিফ মাহমুদ সোহান বলেন, ভিসি একাধিকবার বলেছেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় করা ঠিক হয়নি। আমরা বলবো, তাকে ভিসি করা ঠিক হয়নি। তিনি কান্ডজ্ঞানহীন বক্তব্য দেন সব সময়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি তার আবেগ ও ভালোবাসা নেই। তিনি এসেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের শিক্ষক বানাতে।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা দাবি জানান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে যারা মর্যাদা দেবেন, মনে প্রাণে ধারণ করবেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমন শিক্ষককে ভিসি ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগ দিতে হবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।