দীর্ঘদিন ধরে ছিনতাইয়ে জড়িত ইউসুফ আলী। তার সহযোগী আবুল হোসেন। ভোরবেলায় মানুষের ব্যাগ ধরে টান দেয় তারা। বাজার করতে যাওয়ার সময়ও কেড়ে নেয় মানুষের টাকা। এক্ষেত্রে তাদের হাতিয়ার ধারালো চাপাতি। 'ঘাড় নামিয়ে দেব' বলে হুমকি দিয়েই কেড়ে নেয় টাকা ও মোবাইল ফোনসেট। রাজধানীর রামপুরা থেকে শুরু করে মালিবাগ বাজার এলাকা, চৌধুরীপাড়া ও শাহজাহানপুরের বিভিন্ন এলাকায় চলছে তাদের দৌরাত্ম্য। গত কয়েকদিনে চাপাতির ভয় দেখিয়ে মালিবাগ আবুল হোটেল এলাকায় অন্তত তিনটি ছিনতাই করেছে এই চক্র। এই চক্রের দৌরাত্ম্যে মানুষ এতটাই অতিষ্ঠ যে, তাদের গ্রেফতারে এলাকায় পোস্টারিংও করা হয়েছে। স্থানীয় লোকজন ফেসবুকেও এদের গ্রেফতারের আহ্বান জানিয়েছে।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, ফেসবুকে পাওয়া তথ্যের সূত্র ধরে এবং মালিবাগ এলাকায় ওই ছিনতাইকারী চক্রের ছবি দেখে খোঁজখবর নেওয়া শুরু হয়। এরপর বিভিন্ন এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেও ওই চক্রটির ছিনতাই দৃশ্য দেখা যায়। এরপরই চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু হয়। ওই ছিনতাইকারীদের সম্পর্কে তথ্য থাকলে তা থানায় জানানোর আহ্বান সংবলিত পোস্টার মালিবাগ বাজার এলাকার বিভিন্ন দেয়ালে দেখা যায়। পোস্টারে ফুলহাত সাদা গেঞ্জি ও কালো ফুলপ্যান্ট পরা এক যুবককে পেছনে হাত দিয়ে হাঁটতে দেখা যায়। তার সামনে আরেক যুবককে দৌড়ানোর ভঙ্গিতে দেখা যায়। পোস্টারের নিচে লেখা রয়েছে- 'এদের সম্পর্কে জানা থাকলে নিকটস্থ থানায় অবহিত করুন'। তবে কারা এই পোস্টার সেঁটেছে তা লেখা নেই। অবশ্য শাহজাহানপুর থানা পুলিশ জানিয়েছে, স্থানীয় লোকজন ছিনতাইকারীর ছবি সংবলিত ওই পোস্টার লাগিয়েছে।
শাহজাহানপুর থানার ওসি শফিকুল ইসলাম মোল্যা বলেন, তারা পোস্টারের সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করেন। এরপর বেরিয়ে আসে পোস্টারে থাকা দুই ছিনতাইকারী থানার তালিকাভুক্ত অপরাধী। মাস খানেক আগেও ইউসুফ আলী ও আবুল নামে ওই দু'জনকে তারা গ্রেফতার করেছিলেন। জামিনে বের হয়ে আবারও ছিনতাই শুরু করেছে। তবে তাদের আইনের আওতায় নিতে অভিযান চলছে। মালিবাগ প্রথম লেনের একাধিক বাসিন্দা জানিয়েছেন, এই চক্রটি ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত ছিনতাই করে। যাত্রীরা কমলাপুর থেকে ট্রেনে ও মালিবাগে দূরপাল্লার বাস থেকে নেমে বাসায় ফেরার পথে বা স্টেশনে যাওয়ার পথে এরা চাপাতি ঠেকিয়ে সবকিছু কেড়ে নেয়। এমনকি বাজারে যাওয়ার সময়ও চাপাতি ঠেকিয়ে টাকা-পয়সা কেড়ে নিয়ে রেললাইনের দিকে পালিয়ে যায়। তবে অনেকেই এ নিয়ে আর থানা-পুলিশ পর্যন্ত যান না।
শাহজাহানপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল মাবুদ জানান, পোস্টারের ছবিতে থাকা এই চক্রটিকে তারা কয়েক দফা গ্রেফতার করেছিলেন। কিন্তু তারা জামিনে বেরিয়ে একই অপকর্ম করে আসছে। অভিযোগ পাওয়ার পর চিহ্নিত ছিনতাইয়ের স্পটগুলোতে পুলিশের টহল বাড়ানোর পাশাপাশি চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। অবশ্য ছবি প্রকাশের পর তারা আত্মগোপনে চলে গেছে। এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ছবি দেখে তারা ছিনতাইকারী চক্রের দু'জনকে এরই মধ্যে চিহ্নিত করেছেন। পুরনো রেকর্ড ঘেঁটে দেখেছেন, ছিনতাইকারী ইউসুফের বিরুদ্ধে হত্যা, ছিনতাই ও মাদক আইনে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। সোর্স ব্যবহার করে তারা নিশ্চিত হয়েছেন, ইউসুফ রামপুরা-মালিবাগ এলাকায় ছিনতাইকারী একটি গ্রুপের অন্যতম হোতা। তারা চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে বা ভয় দেখিয়ে ছিনতাই করে থাকে।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।