সদরঘাটে নৌকাডুবি, ভেদরগঞ্জের ৬ জন নিহত

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: শুক্রবার ৮ই মার্চ ২০১৯ ০৮:৪৭ অপরাহ্ন
সদরঘাটে নৌকাডুবি, ভেদরগঞ্জের ৬ জন নিহত

সদরঘাটে লঞ্চের ধাক্কায় ডিঙ্গি নৌকা ডুবে নিখোঁজ ৬ জনের মধ্যে ৫জনের সন্ধান এখনও মেলেনি। নিহতরা সবাই শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ তারাবনিয়া ইউনিয়নের কিরণনগর জাফর আলী মালকান্দি গ্রামের  বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার  (৭ র্মাচ ) রাত ১০টার দিকে বরিশালের ল  ঘাটে সুরবী-৭ লঞ্চের ধাক্কায় ডুবে যায় ডিঙ্গি নৌকাটি। এ সময় আহত অবস্থায় শাহাজালাল নামে নৌকার এক যাত্রীকে উদ্ধার এবং শুক্রবার দুপুরে জামসেদা নামে আরও একজনের লাশ উদ্ধার করা হলেও বাকি ৫ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজরা হলেন,কামাল চৌকদারের মেয়ে  জামসেদা বেগম(২৫), তার স্বামী দেলোয়ার হোসেন প্রধানিয়া(৩০), সাত মাস বয়সী শিশুপুত্র জোনায়েদ,ঢাকা থেকে শরীয়তপুরের উদ্দেশে রওনা হন। সঙ্গে ছিলেন চাচাত ভাই শাহজালাল চোকদার, তার স্ত্রী শাহিদা বেগম(৩০), তাদের দুই সন্তান মিম(১০) ও মাহি(৭)। তারা সবাই কামাল চোকদারের মেয়ে খাদিজা আক্তারের বিয়ের অনুষ্ঠান আসছিল

শাহাজালালকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হলেও বাকিদের কোনো সন্ধান এখনও মেলেনি। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে খাদিজার বিয়ের অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। বিয়ে বাড়িতে এখন চলছে শোকের মাতম। অনেক স্বজন তাদের সন্ধানে ঢাকায় বুড়িগঙ্গার তীরে ছুটে আসেন। শুক্রবার দুপুরে বাড়ির উঠানে বসে বিলাপ করছিলেন জামসেদার মা ইয়ারুন নেছা ও বাবা কামাল চোকদার। তারা বারবার বলছিলেন, আমার মারে আর নানু ভাইরে আইন্না দে। অগো কইছিলাম রাইতের লে  আহিস না। একদিন আগে দিনে আয়। আমার সব শেষ হইয়া গেল।

শাহজালাল চোকদারের বাবা মহসিন চোকদার বলেন, আমরা গরিব মানুষ। অভাবের সংসার হওয়ায় শিশি বয়সেই ছেলেকে কাজে ঢাকায় পাঠাই। সেখানে দর্জির কাজ শিখেছিল। ভালোই আয়-রোজগার করত। তার পাঠানো টাকায় আমরা চলতাম। বৌ আর নাতনি দুটার খোঁজ পাচ্ছি না। ছেলেটার দুইটা পা বিচ্ছিন্ন হইয়া গেছে। আল্লাহ কেন এত বড় বিপদ দিল আমারে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্ঘটনার সময় লে র পেছনে থাকা পাখার আঘাতে শাহজালালের দুই পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পাশেই থাকা নৌপুলিশের একটি টহল দল শাহজালালকে উদ্ধার করে মিটফোর্ড হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। সেখান থেকে তাকে অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে (পঙ্গু হাসপাতাল) ভর্তি করা হয়। নৌকার মাঝি সাঁতরে পাড়ে উঠতে সক্ষম হয়। ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির আহম্মেদ ইওেফাককে বলেন, নৌ-দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ছয়জন নিখোঁজ থাকার বিষয়টি অত্যন্ত বেদনাদায়ক। সরকারি সংস্থাগুলো নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধান করছে। ওই পরিবারগুলোর পাশে উপজেলা প্রশাসন সার্বক্ষণিক থাকবে।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব