নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় কভারভ্যানের সাথে এক মটোরসাইকেলের সংঘর্ষে মটোরসাইকেলের তিন আরোহী আহতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসী ও পুলিশের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পুলিশের ৩ সদস্য, স্থানীয় সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি ও গ্রামবাসীসহ ১৫জন আহত হয়েছে। একপর্যায়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ও ফাকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। শুক্রবার দুপুরে ঘোড়াশাল পৌর এলাকার বাগপাড়া গ্রামে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে আহতরা হলেন, পলাশ থানার এসআই মনির হোসেন, কনস্টেবল হারুন মিয়া, আবুল হোসেন, দৈনিক মুক্তখবর পত্রিকার স্থানীয় সাংবাদিক জুয়েল মিয়া, ঘোড়াশাল পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রোমেল মিয়া।
এছাড়াও স্থানীয়দের মধ্যে আহত হন, সাখাওয়াত হোসেন, রাব্বি মিয়া, সোহেল মিয়া, এমায়েত হোসেন, মানছুর মিয়াসহ ১০জন।পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, দুপুরে বাগপাড়া গ্রামে অবস্থিত প্রাণ আরএফএল গ্রুপের একটি কভারভ্যান প্রতিষ্ঠানটির পাশে সড়কে একটি মটোরসাইকেলের সাথে সংঘর্ষ হয়। এতে মটোরসাইকেলে থাকা চরপাড়া গ্রামের রতন মিয়া, জসিম উদ্দিন ও রনি নামে তিন আরোহী গুরুত্বর আহত হয়। এ ঘটনার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত গ্রামবাসী দুর্ঘটনাগ্রস্থ কভারভ্যান ও প্রাণ আরএফএল গ্রুপের বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর চালায়। একপর্যায়ে প্রতিষ্ঠানটি থেকে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে গ্রামবাসী ও পুলিশের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ বেধে যায়। প্রায় দুই ঘন্টাব্যাপী দাওয়া পাল্টাদাওয়া ইটপাটকেল ছুড়াছুড়ি হয়। এতে পুলিশের তিন সদস্য আহত হলে পুলিশ গ্রামবাসীকে লাঠিচার্জ শুরু করে।
এসময় সংঘর্ষের ছবি তুলতে গিয়ে পুলিশের লাঠিচার্জে আহত হয় স্থানীয় এক সাংবাদিক। সংঘর্ষে আহত সাখাওয়াত হোসেন নামে এক ব্যক্তি জানান, প্রাণ আরএফএল গ্রুপের ব্যাপরোয়া কভারভ্যান প্রায় সময় বাগপাড়া সড়কে দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে। দুপুরে তাদের এক কভারভ্যান ব্যাপরোয়া গতিতে একটি মটোরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। এতে মটোরসাইকেলের তিন আরোহী গুরুত্বর আহত হয়। বারবার দুর্ঘটনা ঘটালেও প্রতিষ্ঠানটি চালকদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় গ্রামবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিষ্ঠানটি ঘেরাও করে প্রতিবাদ করে। পরে পুলিশ এসে উত্তেজিত অবস্থায় আমাদের উপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে তারা আমাদের লক্ষ্য করে গুলিও ছুড়ে। আহত স্থানীয় সাংবাদিক জুয়েল হোসেন জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে যাই।
ঘটনাস্থলে গ্রামবাসীর উপর পুলিশের লাঠিচার্জের ছবি তুলতে গেলে পুলিশের এক সদস্য আমাকে লাঠি দিয়ে পিটাতে থাকে। তখন আমি মিডিয়ার কর্মী পরিচয় দিলেও তারা আমার কোন কথা শুনেনি। কাউন্সিলর রোমেল জানান, উত্তেজিত জনতাকে থামাতে গিয়ে উভয় পক্ষের হামলায় আমিও আহত হই। পরে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এব্যাপারে পলাশ থানার এসআই মনির হোসেন জানান, সড়ক দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজিত জনতা প্রাণ আরএফএল প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে সঙ্গিয় ফোর্সসহ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে উত্তেজিত জনতা আমাদের উপর চড়াও হয়। একপর্যায়ে তারা আমাদের উপর ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। এতে আমি ও আমার দুই কনস্টেবল আহত হই। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৬ রাউন ফাঁকা গুলি ছুড়লে উত্তেজিত জনতা সরে পড়ে। সাংবাদিকের উপর হামলার বিষয়টি আমার জানা নেই। এব্যাপারে পলাশ থানার ওসি মকবুল হোসেন মোল্লা জানান, পুরো বিষয়টি এখনও জানা হয়নি। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে পরে জানানো হবে।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।