মরা মুরগী রান্না না করায় বরিশালে হোটেল কর্মচারীকে মারধর!

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: রবিবার ২৪শে ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১০:০৬ অপরাহ্ন
মরা মুরগী রান্না না করায় বরিশালে হোটেল কর্মচারীকে মারধর!

দেশের বিভিন্ন হোটেল রেস্তোরায় মরা মুরগী রান্নার অভিযোগ শোনা গেলেও এবার খোদ বরিশালের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নথুল্লাবাদে হোটেল কস্তুরীতে মরা মুরগী রান্নার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে সহজ-সরল কর্মচারীরা মরা মুরগী রান্না না করায় মালিকের নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তাদের। এমনকি কর্মচারীদের মেরে ফেলারও হুমকি দেন হোটেল মালিক মাসুদ পারভেজ। আর মালিকও কছম দিয়ে কর্মচারীকে মারধরের কথা স্বীকার করলেও মরা মুরগীর বিষয়টি এরিয়ে যান। গত শনিবার সন্ধ্যার পর এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কয়েক বছর পূর্বে নগরীর নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় সরকারি খাস জমিতে সরকারী দলের তকমা লাগিয়ে কস্তুরী নামে একটি হোটেল চালু করেন মাসুদ পারভেজ। হোটেলের একাধিক কর্মচারী জানান, দীর্ঘদিন থেকেই হোটেলে মরা মুরগী রান্না করা হতো। নগরীর বিভিন্ন মুরগীর দোকান থেকে মরা মুরগী স্বল্প মূল্যে কিনে নিয়ে আসতেন হোটেল মালিক। কর্মচারীরা প্রথম প্রথম কিছু না বললেও বিবেকের তাড়নায় গত শনিবার মরা মুরগী রান্না করতে অনীহা প্রকাশ করে। আর এতেই ক্ষীপ্ত হন হোটেল মালিক মাসুদ পারভেজ। কর্মচারী নাদিম (১৬)কে বেদম মারধর করেন তিনি। এতে অন্যান্য কর্মচারী আজিজুল ও নবিনও ক্ষীপ্ত হন। ইতিমধ্যে সেখানে উপস্থিত বেশ কয়েকজন সংবাদকর্মী। 

তাদের সামনেই প্রকাশ্যে কর্মচারীকে মারধরের কথা স্বীকার করেন হোটেল মালিক মাসুদ পারভেজ। যার ভিডিও রয়েছে এ প্রতিবেদকের হাতে। জানা গেছে, সংবাদকর্মী ঘটনাস্থলে আসায় ওই তিন কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। কর্মচারী আজিজুল ও নবিন জানান, কথায় কথায় তাদের মারধর করেন হোটেল মালিক মাসুদ পারভেজ। এছাড়া টানা ১১ ঘন্টা ডিউটি করতে হয় তাদের। আজিজুল বলেন, তার মায়ের অসুস্থতার খবরে ছুটি চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু নির্দয় মাসুদ তাকে ছুটি না দেয়ায় না বলেই মাকে দেখতে গিয়েছিলেন তিনি। এজন্য এক মাসের বেতনের টাকা পায়নি সে। উপরে ফিটফাট হলেও ভেতরে সদর ঘাটের অবস্থা হোটেল কস্তুরীতে। বয়সে ছোট কর্মচারীদের জীবনের ভয় দেখিয়ে আটকে রাখেন হোটেল মালিক মাসুদ। আর কোন কর্মচারী কাজ ছেড়ে চলে যেতে চাইলে এক মাসের বেতনের টাকা রেখে যেতে হয় তাকে। এ সব অভিযোগের ব্যাপারে হোটেল কস্তুরীর অপর মালিক আমির হোসেনন বলেন, তিনি চরমোনাই মাহফিলে থাকায় ঘটনার ব্যাপারে পরে জেনেছেন। তিনি বলেন, কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর ভাইয়ের উপস্থিতিতে ওই কর্মচারীদের বেতনের টাকা দিয়ে চাকরি থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। এদেরকে হোটেলে রাখলে পরবর্তীতে আবার কোন ঘটনা ঘটাতে পারে বলেন তিনি।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব