জুতা পায়ে শ্রদ্ধা জানালেন ইউপি চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: শনিবার ২৩শে ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৮:৪৯ অপরাহ্ন
জুতা পায়ে শ্রদ্ধা জানালেন ইউপি চেয়ারম্যান

মহান একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ঝালকাঠি সদর উপজেলার গাভা রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের একটি স্কুলে কলাগাছ দিয়ে তৈরি শহীদ মিনারে পুস্পমাল্য অর্পণ করেন ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা মাসুম শেরওয়ানি। এ সময় তার পায়ে ছিলজুতা। সঙ্গে ছিলেন আরও তিন জন। তাদেরও সবার পায়ে জুতা ছিল। সেই ছবি শুক্রবার সকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এক মুক্তিযোদ্ধা তার ফেসবুক আইডিতে ছবিসহ একটি স্ট্যাটাস দিলে শুরু হয় তোলপাড়। এ ঘটনার সমালোচনা করে মন্তব্য করেছেন অনেকেই।

জানা গেছে, গাভা রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের বেড়মহল হাসান মেমোরিয়াল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভাষা শহীদদের স্মরণ করতে কলাগাছ দিয়ে শহীদ মিনার তৈরি করে। বিদ্যালয়ের পাশেই শহীদ মিনারে একুশের প্রথম প্রহরে শিশুরা ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সকালে ওই শহীদ মিনারে এসে ফুল দেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মাওলা মাসুম শেরওয়ানি। সঙ্গে ছিলেন আরও তিনজন। প্রত্যেকেই জুতা পরা অবস্থায় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সেই ছবি প্রথমে ফেসবুকে আপলোড করেন তার সমর্থকরা। মুহূর্তের মধ্যেই তা ছড়িয়ে পড়ে।

ছবিটি দিয়ে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার দুলাল সাহা একটি স্ট্যাটাস দেন। তিনি লেখেন ‘বিবেক কি জাগ্রত হবে’। এতে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ জুতা পায়ে শহীদ মিনারে গোলাম মাওলা মাসুম শেরওয়ানির ফুল দেয়ার সমালোচনা করেন। ওই স্ট্যাটাসে ঝালকাঠির বিশিষ্ট আইনজীবী নাসির উদ্দিন কবির মন্তব্য করেছেন, তার (মাসুম শেরওয়ানি) পরিচয়ের সঙ্গে কাজের মিল আছে। নাজিব নাঈম নামে একজন লিখেছেন, এটা খুবই দুঃখজনক। এই লোক জনপ্রতিনিধি হয় কি করে? বোঝাই যাচ্ছে উক্ত কাজ শদীদের স্মরণে নয়, ছবি তোলার জন্য করেছেন। কবির হুমায়ুন নামে একজন লিখেছেন, শহীদ মিনারের বেদীতে যে জুতা পায়ে ওঠা যায় না, এটাও জানে না সে (মাসুম শেরওয়ানি)।

মুক্তিযোদ্ধা দুলাল সাহা বলেন, বঙ্গবন্ধুর কোট পরে একজন ইউপি চেয়ারম্যান জুতা পায়ে শহীদ মিনারে ফুল দিচ্ছে, এটাও আমাদের দেখতে হচ্ছে। এটা অত্যন্ত নিন্দনীয়, যা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। তিনি শুধু শহীদদের সম্মানহানি করেনি, গোটা সমাজকে হেয় করেছেন। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমি এ ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। এ বিষয়ে গাভা রামচন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা মাসুম শেরওয়ানি বলেন, জনপ্রতিনিধি হিসেবে কয়েকটি স্থানেই শহীদ মিনারে ফুল দিয়েছি। জুতা পরা ছিল কি-না মনে নেই। যদি হয়ে থাকে এটা ভুলে হয়েছে।

ইনিউজ ৭১/এম.আর