রাজধানীর চকবাজার মোড়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতদের বেশিরভাগই সড়কে চলাচলরত অবস্থায় এবং শাটার বন্ধ করে দেওয়া দোকান বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভেতর আটকা পড়ে মারা যান। প্রত্যক্ষদর্শী ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা এই তথ্য জানিয়েছেন।আজিজুল ইসলাম নামে এক ফায়ারম্যান জানান, ‘আগুন লাগা ভবনটির নিচতলার মার্কেটের করিডরের শেষ মাথা থেকে একসঙ্গে ২৪টি লাশ উদ্ধার করি আমরা। দেখে মনে হয়েছে আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে তারা দৌড়ে গিয়ে সেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন। এছাড়া আশেপাশের দোকান ও রেস্টুরেন্ট থেকেও লাশ উদ্ধার করা হয়।’
প্রত্যক্ষদর্শী প্লাস্টিক ব্যবসায়ী পারভেজ জানান, ‘ওয়াহেদ ম্যানশনের নিচতলায় রানা টেলিকম, বিপরীতে হাবিব টেইলার্স, হায়দার ফার্মেসিসহ আশেপাশের সব দোকান সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শাটার বন্ধ করে দেয়। সবাই ভেবেছিল শাটার বন্ধ করে দিলে আগুন থেকে বাঁচতে পারবে। কিন্ত আগুনের তীব্রতা বাড়ার কারণে সেখানেই পুড়ে মারা যায় তারা।’চকবাজারে আগ্নিকাণ্ড নূর ইসলাম নামে আরেক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ‘রাজমহল ও উল্টোদিকের হোটেলে যারা ছিল তারাও সেখানেই মারা গেছে।’সরেজমিনে দেখা যায়, চকবাজারের চুরিহাট্টা মোড়টি একটা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সড়কে দুটি পিকআপ ভ্যান, একটি প্রাইভেটকার, অসংখ্য রিকশা, ভ্যান, সাইকেল, মোটরবাইক, ঠেলাগাড়ি পুড়ে গেছে। এছাড়া ভেঙে পড়া কংক্রিটের দেয়াল, প্লাস্টিকের দানা, পারফিউমের ক্যান পড়ে রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আগুন লাগার সময় চুরিহাট্টা মোড়টি যানজটে ঠাসা ছিল। একারণে রাস্তাতেই অনেকে পুড়ে মারা গেছে।চকবাজারে অগ্নিকাণ বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টা ৩৮ মিনিটে রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজার থানার চুড়ি হাট্টা শাহী মসজিদের সামনে একটি পিকআপের সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর আশেপাশের ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট সাড়ে চারঘণ্টার মতো কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে নেয়। এই ঘটনায় দগ্ধসহ আহত কমপক্ষে অর্ধশত ব্যক্তিকে ইতোমধ্যে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহাম্মেদ খান বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে জানান, ‘এখন পর্যন্ত ৭০টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও ঘটনাস্থলে সার্চ অভিযান চলছে।’শাহবাগ থানার এসআই জসিম উদ্দিন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রাখা লাশগুলোর বিষয়ে বলেন, ‘এখনও কোনও লাশ আনুষ্ঠানিকভাবে শনাক্ত করা হয়নি। ডিএনএ-সহ লাশ শনাক্তকরণের যেসব প্রক্রিয়া আছে সেগুলো সম্পন্ন করা হবে। তবে স্বজনদের কেউ কেউ নিজেদের মতো করে লাশ শনাক্ত করেছেন।’
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।