শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় সরকারি অনুমোদন আর নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই চলছে এশিয়ান হাসপাতালের কার্যক্রম। হাসপাতালটি একটি চিহ্নিত প্রতারকচক্র দখলে নিয়ে নিয়ন্ত্রন করছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। বর্তমানে তারা প্রতিষ্ঠানটি অবৈধভাবে ভোগ দখল করছে এবং চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগিদেরও প্রতারিত হতে হচ্ছে।এদের কাছে হাসপাতাল পরিচালনার বৈধ সনদপত্র ও ভবন মালিকের সাথে কোনও চুক্তিপত্র না থাকায়, মালিকপক্ষ তাদেরকে ভবনটি ছেড়ে দিতে বলে।কিন্তু দখলকারিরা বিশেষ একটি এলাকার প্রভাব খাটিয়ে প্রতারনার মাধ্যেমে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন ভবন মালিক কতৃপক্ষ।
অভিযোগকারী মুকুল হোসেন জানান, বাইপাইল বগাবাড়ি এলাকার মহাসড়ক সংলগ্ন মৃত আসাদুজ্জামান ও তার ভাই মুকুল হোসেন খান এর মালিকানাধীন বিল্ডিংয়ের নিচতলা ও দ্বিতীয় তলা হাসপাতাল পরিচালনার জন্য মেশিনারীজসহ সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানাধীন মোহনপুর গ্রামের সুরেশ চন্দ্র মন্ডলের ছেলে ডাঃ সুব্রত চন্দ্র মন্ডল এর নিকট ২০১৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর মাসিক দেড় লাখ টাকা ভাড়ায় প্রদান করা হয়। কয়েক মাস আগে ভাড়াটিয়া কন্ট্রাক্ট বাতিল করে ডাঃ সুব্রত চন্দ্র মন্ডল চলে যান। এসময় কয়েকজন চিহ্নিত প্রতারকচক্র হাসপাতালটি দখলে নিয়ে হাসপাতালটি পরিচালনার দায়িত্ব নেয়। একপর্যায়ে তারা মালিকপক্ষের ছেলে কামরুজ্জামানের কাছ থেকে মৌখিকভাবে ভাড়া গ্রহণ করার অনুমতি নেয়। তবে ভাড়া নেয়ার পর ঠিকমতো ভাড়া না দিয়ে তারা প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণ করেন।
ঘটনায় ৫ ফ্রেব্রুয়ারি মালিক পক্ষ থেকে মুকুল হোসেন খান বাদি হয়ে চিহ্নিত হাসান ওরফে মিরাজ, তৌহিদ ও রেজা নামে ৩ প্রতারককে বিবাদী করে আশুলিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। ডায়েরিতে অভিযোগ করা হয়, ডাঃ সুব্রত চন্দ্র মন্ডল চলে যাওয়ার পর তারই রেফারেন্সে উল্লেখিতরা ভাড়া না দিয়ে এবং ফ্লোরের অগ্রিম প্রদান না দিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে। বার বার তাগাদা দেয়া সত্ত্বেও বাকি ভাড়া ৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা প্রদান না করে ফ্লোর মালিকের হাসপাতালের বিভিন্ন পরীক্ষার জন্য মেশিনারীর ক্ষতিসাধন করেছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। ক্ষতিসাধনকৃত মেশিনারী যার মূল্য ২২ লাখ টাকা। ভাড়ার টাকা চাইলে ইদানিং উল্টো ভয়-ভীতি ও হুমকি প্রদান করে বলেও জানান। ফ্লোর ছাড়িয়া দিতে বললেও তারা না ছেড়ে জোরপূর্বক অবস্থান করছেন। এ কারনেই থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।
হাসপাতালের বর্তমান ব্যবস্থাপক পরিচয়ে মোঃ জাহিদ হাসান জানান, ডাঃ সুব্রত চন্দ্র মন্ডল তাদেরকে দায়িত্ব দিয়ে গেছেন। তিনি তাদের পার্টনার ছিল। পার্টনারের চুক্তিপত্র চাইলে তারা এ সংক্রান্ত কোন চুক্তিপত্র দেখাতে পারেননি। আর বিল্ডিংয়ের ফ্লোর ভাড়া সংক্রান্ত কোন চুক্তিপত্রও তারা দেখাতে পারেননি। ওই হাসপাতালটির স্বাস্থ্য সেবা প্রদান ও হাসপাতাল কার্যত্রম পরিচালনার সরকারি অনুমতি সংক্রান্ত কাগজপত্র দেখতে চাইলে তাও তারা তা দেখাতে পারেননি। তবে হাসপাতালের মতো গুরুত্বপূর্ন প্রতিষ্ঠান কিভাবে অনুমোদনহীন এবং অবৈধভাবে পরিচালিত হচ্ছে আর কেই বা ব্যবস্থা নিবে তা নিয়ে সংশয় স্থানীয়দের। অন্যদিকে ডাঃ সুব্রত চন্দ্র মন্ডলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এশিয়ান হাসপাতাল এন্ড ডায়গনস্টিক সেন্টার নামে কোনও হাসপাতাল আমি চিনি না। জানতে চাইলে আশুলিয়া থানার উপ পরিদর্শক বেলায়েত হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, উভয় পক্ষকে নিয়ে বসে বিষয়টি সুরাহা করতে বলা হয়েছে। শীঘ্রই এর সমাধান হবে বলেও তিনি জানান।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।