ঘুমধুমে জায়গা-জমি দখলে নিতে পাল্টাপাল্টি মামলার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
শ.ম.গফুর , উপজেলা প্রতিনিধি উখিয়া- কক্সবাজার
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ৩১শে জানুয়ারী ২০১৯ ০১:২০ অপরাহ্ন
ঘুমধুমে জায়গা-জমি দখলে নিতে পাল্টাপাল্টি মামলার অভিযোগ

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের ২৭১ নং তুমব্রু মৌজায় আর কবলিয়তের বন্দোবস্তি অজুহাতে জায়গা দখলের অপচেষ্টার অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী মোজাম্মেল হক গং। এ ব্যাপারে বান্দরবান চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে পিটিশন অভিযোগ দায়ের করেছে ক্ষতিগ্রস্তরা।দায়ের করা পিটিশন সুত্রে জানা গেছে ঘুমধুম ইউপির ৪ নং ওর্য়াডের মৃত দরবেশ আলীর ছেলে মোজাম্মেল হকের পৈতৃকসম্পত্তি জবর দখল চেষ্টা চালিয়ে আসছেন একই এলাকার হাজী নুর আহমদের ছেলে, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান জামায়াত নেতা নুরুল আবছার ও তার পুত্ররা।মোজাম্মেল হক গং ও নুরুল আবছারের জায়গা-জমির সীমানা বিরোধ রয়েছে দীর্ঘ বহু বছর ধরে। উক্ত জমিজমা ও সীমানা নিয়ে নুরুল আবছার একটি নাদাবী পত্রও দেয় মোজাম্মেল হকের পিতা দরবেশ আলীকে।ওই নাদাবী পত্র অমান্য করে নুরুল আবছার ১১৬ নং আর কবলিয়তের অজুহাতে মোহাম্মেল হক গংয়ের ৪ একর ৬৫ শতক ৩য় শ্রেনীর বাগান সৃজিত জমি জবর দখল চেষ্টা চালিয়ে আসছে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে।যা নিয়ে বান্দরবান কোর্টে মামলাও বিচারাধীন রয়েছে দু'পক্ষের মধ্যে।

দু'পক্ষের পূর্ব বিরোধকে কেন্দ্র করে এক জায়গা নিয়ে নতুন পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করেছে পরস্পরের বিরোদ্ধে। ধারাবাহিতায় গত ৪ জানুয়ারি সকাল ১১ টায় মোজাম্মেল হক গংয়ের জায়গায় সৃজিত বাগান থেকে আকাশমনি গাছ কেটে নিয়েছে নুরুল আবছারের নেতৃত্বে ছেলে শাহনেওয়াজ,মো: কায়সার,তুমব্রু পশ্চিমকুল এলাকার মৃত ওলা মিয়ার ছেলে নুরুল কবির,মৃত আজিম উদ্দিনের ছেলে আমীর বশর,মমতাজ মিয়ার ছেলে আবদুল হামিদ, বড় মহেশখালীর জনৈক মো: নোমান, মো: সোয়াইব সহ অজ্ঞাত ৩০/৩৫ জনের দুর্বৃত্তের দল।

এঘটনায় তাদেরকে এজাহার নামীয় আসামী করেছে মোজাম্মেল হক গং।অভিযুক্তরা মোজাম্মেল হক গংয়ের জায়গা-জমি ও বাগান জবর দখলের উদ্দ্যেশে গাছ কেটে নিয়ে যায়,পোল্ট্রি খামার থেকে চাঁদা দাবী করে।তাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করার অভিযোগ আনয়ন করে।মামলায় ৮জন এজাহার নামীয় ও অজ্ঞাতনামা আরো ৩০/৩৫জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। ৩য় শ্রেনীর জায়গায় সীমানা চৌহদ্দি চিহ্নিত করে বনায়ন সৃজন করত মোজাম্মেল হক গং।এতে শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোগ দখল বজায় রেখে আছেন তাঁরা।উক্ত ৪ একর ৬৫ শতক জায়গায় দখলামল বজায় ও রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছেন মোজাম্মেল হক গং।

উক্ত জায়গায় সৃজিত আকাশমনি বাগানে ৪ জানুয়ারী সকাল ১১ টার দিকে ঘুমধুম ইউনিয়নের ২৭১ মৌজায় মোজাম্মেল হক গংয়ের সৃজিত বাগানে অভিযুক্তরা ধারালো দা,খুন্তি,করাত,কুড়াল নিয়ে বাগানে অনুপ্রবেশ করে নির্বিচারে গাছ কেটে বাগান শাবাড় করে এবং ভিটি স্থাপনা নির্মাণের  তলা সৃজন করে। ওইদিন বাগান থেকে কেটে নেওয়া গাছ ডাম্পার ভর্তি করে বিপুল পরিমাণ লুটপাট করে নিয়ে যায়।বারণ করলে তাকে জানে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে উল্টো চাঁদা দাবী করে।বড়-বড় গাছ দিনে কেটে রাত্রে নিয়ে গেলেও অবশিষ্ট গাছ দিয়ে বাগান সাবাড় করা জায়গায় অন্তত ৪০/৪৫ টি ভিটি জায়গা তৈরী করে রেখেছে। মোজাম্মেল হক গংয়ের ৪ একর ৬৫ শতক জায়গা জবর দখলের উদ্দ্যেশ্যে কয়েক শতাধিক গাছ কেটে সাবাড় করায় অন্তত ৭ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবী করেন মোজাম্মেল হক।

এ ব্যাপারে বান্দরবান চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সার্ভেয়ারকে।২৯ জানুয়ারি নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সার্ভেয়ার মনির হোসেন ঘটনাস্থলে তদন্ত করে বাগান থেকে কাটা বেশ কিছু গাছের কর্তন অংশ দেখেন।জমির সার্ভে করে সীমানা দেখেন।নুরুল আবছার কর্তৃক দাবী করা আর কবলিয়তের কোন অস্তিত্ব সেখানে নেই বলে দাবী করেন।আর কবলিয়ত জায়গা রয়েছে তুমব্রু খালের উত্তরে পুরান রিফিউজি পাড়ায়।এ ব্যাপারে প্রতিবেদন দাখিল করবেন বলে জানান সার্ভেয়ার। প্রতিবেদন তৈরী করে আদালতে পাঠাবো।সার্ভে তদন্ত কালে ঘুমধুম ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন,আওয়ামীলীগ নেতা রেজাউল করিম মামুন সহ গণমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

ইনিউজ ৭১/এম.আর