রাস্তা ছাড়া নিঃসঙ্গ ব্রিজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: রবিবার ২০শে জানুয়ারী ২০১৯ ০২:০২ অপরাহ্ন
রাস্তা ছাড়া নিঃসঙ্গ ব্রিজ

ফেনীর সোনাগাজীতে রাস্তা ছাড়া নিঃসঙ্গভাবে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে দাঁড়িয়ে আছে ব্রিজটি। উপজেলার মজলিশপুর ইউনিয়নের চরবদরপুর গ্রামে অলি মাঝির বাড়ি সংলগ্ন ছোট ফেনী নদীর কূল ঘেঁষা খালের ওপর নির্মিত ব্রিজটি প্রায় দেড় যুগেও কোনো কাজে আসেনি। ফসলি জমির মাঝে খালের উপর নির্মিত ব্রিজের পলেস্তরা খসে পড়ে গেছে। অব্যবহৃত ব্রিজের শরীরে পড়ে শ্যাওলার দাগ। ব্রিজের আধা কিলোমিটারের মধ্যে কোনো বসতবাড়ি নেই। নেই কোনো মানুষের আনাগোনা। সামান্য উত্তরে ছোট ফেনী নদী, ন্যূনতম ২ কিলোমিটার পশ্চিমে চরবদরপুর মাওলান পাড়া সড়ক, ১ কিলোমিটার পূর্বে তাকিয়া বাজার-কুটিরহাট সড়ক আর আশপাশে যতদূর চোখ যায় বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ।

feni-bridge

জানা যায়, ২০০৩ সালে উপজেলা প্রকৌশল অধিদফতর প্রায় ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৮ ফুট প্রস্থের ব্রিজটি নির্মাণ করে। তখন নির্মিত ব্রিজের দু’পাশে কোনো সড়ক তৈরি করা হয়নি। সেই থেকে ১৫ বছর পরও ব্রিজটি অব্যবহৃত রয়ে গেছে। মজলিশপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান একেএম তৌকি কালাচান বলেন, ২০০৩ সালে আমার শপথ গ্রহণের কয়েক মাস পর ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। জনবসতি নেই, রাস্তা নেই তারপরও কেন ব্রিজটি নির্মাণ করা হচ্ছে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী জানান, ‘সরকার বরাদ্দ দিয়েছে তাই আমরা কাজ করছি।’ অপ্রয়োজনীয় স্থানে ব্র্রিজটি নির্মাণ না করতে উপজেলা সমন্বয় সভায় কয়েকবার অনুরোধ জানালেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

মজলিশপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক নুর করিম বাহারসহ স্থানীয় এলাকাবাসীরা বলেন, কী কারণে এবং কাদের ব্যাবহারের জন্য ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছে আমরা জানি না। ১৫ বছর ধরে অব্যবহৃত থাকার কারণে ব্রিজটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যখন নির্মাণ করা হচ্ছিল তখন এলাকাবাসী ১ কিলোমিটার দূরে মাওলানাপাড়া সড়কে নির্মাণ করার অনুরোধ করলেও তা আমলে নেয়া হয়নি। একই ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ব্রিজটি নির্মাণের কোনো প্রয়োজন ছিল না। অপ্রয়োজনে সরকারের ৩০ লাখ টাকা জলে ফেলা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোনাগাজী উপজেলা প্রকৌশলী আবুল কাশেম বলেন, বিষয়টি অনেক আগের ঘটনা। তারপরও রাস্তা ছাড়া কী কারণে বিপুল টাকা ব্যয়ে ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হবে।

ইনিউজ ৭১/এম.আর