ইশরাক হোসেনের মহানুভবতা, যে কারনে বিরল মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন !

নিজস্ব প্রতিবেদক
জিয়াউল হক জুয়েল (স্টাফ রিপোর্টার)
প্রকাশিত: বুধবার ১৮ই ডিসেম্বর ২০২৪ ০৬:৪৫ অপরাহ্ন
ইশরাক হোসেনের মহানুভবতা, যে কারনে বিরল মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন !

বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সিনিয়র সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন চরম উদারতা ও মহানুভবতার এক নজির স্থাপন করেছেন। গত ১৭ ডিসেম্বর রাতে কোতোয়ালি থানায় তিনি নিজের ওপর হামলা চালানো ব্যক্তিকে ক্ষমা করে দিয়ে মানবিক দৃষ্টান্ত রেখেছেন। এমনকি নিজের করা মামলার এজহারভুক্ত আসামি হওয়া সত্ত্বেও শিক্ষার্থীদের অনুরোধে হামলাকারীকে থানা থেকে মুক্তি দেয়ার ব্যবস্থা করেন তিনি।


জানা যায়, ২০২২ সালের ৪ ডিসেম্বর পুরান ঢাকায় ঢাকা বিভাগীয় মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে জনসংযোগের সময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ছাত্রলীগের হামলার শিকার হন ইশরাক হোসেন। এই ঘটনায় থানায় মামলা না নিলেও পরে আদালতে মামলা করেন তিনি। মামলার এজাহারভুক্ত আসামি হিসেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র মাইনুদ্দীনকে শনাক্ত করা হয়। 


বিএনপি ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা মাইনুদ্দীনকে রাত ১০টায় কোতোয়ালি থানায় সোপর্দ করেন। এই খবর শুনে মাইনুদ্দীনের সহপাঠীরা ইশরাক হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে তার বাসায় যান, কিন্তু তিনি সেখানে না থাকায় তারা কোতোয়ালি থানার সামনে জড়ো হন। এরপর ভিডিও কলে ইশরাক হোসেনের সঙ্গে কথা বলে মাইনুদ্দীনের মুক্তি দাবি করেন। ছাত্ররা এ সময় হামলার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে এবং ভুল বুঝে হামলায় অংশ নেওয়ার কথা জানিয়ে ক্ষমা চান। 


ইশরাক হোসেন শিক্ষার্থীদের আবেদন মেনে নেন এবং মাইনুদ্দীনের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করে তাকে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ রাতে পৌনে ৩টায় মাইনুদ্দীনকে মুক্তি দেয়।


ইশরাক হোসেন এ বিষয়ে বলেন, ‘‘নবীজি তাঁর ওপর অত্যাচারকারীকে মাফ করেছেন, আর আমি তো অতি নগণ্য মানুষ।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘২০২২ সালে ছাত্রলীগের হামলায় আমি মারাত্মকভাবে আহত হয়েছিলাম। সেই সময়কার ঘটনায় তারা দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং ক্ষমা চেয়েছে। ছাত্র আন্দোলনে মাইনুদ্দীনের ভূমিকা আমার সিদ্ধান্তে প্রভাবিত করেছে।’’ 


কোতোয়ালি থানার ওসি নাসির উদ্দিন জানান, ছাত্রদের অনুরোধে ইশরাক হোসেনের কাছে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে নেয়ার জন্য তারা অনুরোধ জানান এবং বাদীর সম্মতিতে মাইনুদ্দীনকে মুক্তি দেওয়া হয়।


এ ঘটনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ইশরাক হোসেনের মহানুভবতার প্রশংসা করেছেন। অনেকেই বলছেন, তিনি তার বাবা প্রয়াত সাদেক হোসেন খোকার মতোই উদার রাজনীতিবিদ, যারা জনগণের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং বৃহৎ মন নিয়ে রাজনীতি করেন। 


এটি ইশরাক হোসেনের রাজনৈতিক ভাবমূর্তি ও নেতৃত্বের প্রতি শিক্ষার্থীদের শ্রদ্ধা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।