আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত সহকারী (পিয়ন) মো. জাহাঙ্গীর আলমের ব্যাংক হিসাবে ৬২৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করেছে। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, মো. জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী কামরুন নাহারের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম মোট ১৮ কোটি ২৯ লাখ ১০ হাজার ৮৮২ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। এছাড়াও, তিনি ও তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর নামে আটটি ব্যাংকের ২৩টি হিসাবে ৬২৬ কোটি ৬৫ লাখ ১৮ হাজার ১০৭ টাকা জমা এবং উত্তোলন করেছেন। এসব টাকার লেনদেনের পদ্ধতি ও পরিমাণ সন্দেহজনক বলে উল্লেখ করেছে দুদক।
এছাড়া, গত বছর ২০২৪ সালের প্রথম পাঁচ মাসে স্কাই রি এরেঞ্জ নামে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের একটি চলতি হিসাবে ১৭৮ কোটি টাকা জমা এবং উত্তোলন করা হয়েছে, যা অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক বলে দেখা যাচ্ছে।
মামলার পরিপ্রেক্ষিতে, মো. জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী কামরুন নাহারও ৬ কোটি ৮০ লাখ ৪৮ হাজার ৬৪২ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তার বিরুদ্ধেও একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৪ জুলাই গণভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, ‘‘আমার বাসার পিয়ন ছিল, সেও নাকি ৪০০ কোটি টাকার মালিক। হেলিকপ্টার ছাড়া চলে না।’’ এর পরপরই জাহাঙ্গীর আলমের সম্পদ নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা শুরু হয়। অভিযোগ রয়েছে, তার নামে রাজধানী মিরপুরে বাড়ি ও ফ্ল্যাট রয়েছে। এছাড়া, দুদকের অনুসন্ধানে তার আয়ের বিপরীতে অবৈধ সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় জাহাঙ্গীর আলম নিজের আয় হিসেবে ৫০ লাখ টাকা উল্লেখ করেছিলেন, এবং স্ত্রীর নামে সোয়া ১ কোটি টাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে থাকার কথা বলেছিলেন।
এই মামলাগুলোর মাধ্যমে দেশব্যাপী দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুদকের তৎপরতা আরো বাড়ানো হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।