বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে লাগা আগুনের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত মেডিসিন ভবনটি পুনর্বাসন করতে অন্তত তিনদিন প্রয়োজন হবে। বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, ভবনের নিচতলায় আগুনের উৎপত্তি ঘটলেও অন্য ফ্লোরগুলোতে তেমন ক্ষতি হয়নি। তিনি হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান, রোগী, চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফরা নিরাপদে উদ্ধার হয়েছেন এবং কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
আগুনের ঘটনার পর ক্ষতিগ্রস্ত হাসপাতালের ভবন পরিদর্শন শেষে রোববার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এ সময় তার সঙ্গে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. রেজাউল আলম রায়হান, সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, আনসারসহ হাসপাতালের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ডা. মন্ডল বলেন, বর্তমানে রোগীদের চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার জন্য কাজ করছি। সিনিয়র চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধায়নে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আগুনের উৎপত্তিস্থলে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সেখানে ম্যাট্রেস, মশারি এবং অন্যান্য মালামাল পুড়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিসের কার্যক্রমের জন্য এখনও পানি জমে রয়েছে, যা ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নিরূপণে বাধা সৃষ্টি করছে।
রোববার সকাল ৯টার দিকে শেবাচিমের পাঁচতলা নতুন মেডিসিন ভবনের নিচতলার লেলিন স্টোর থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। স্টোরটি পুরুষ মেডিসিন ইউনিটের পাশে। ধোঁয়া দেখে পুরো হাসপাতালে আগুন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিটের ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। তবে ধোঁয়া খুব বেশি হওয়ায় অভিযান শেষ করতে তিন ঘণ্টার মতো সময় ব্যয় হয়।
এদিকে, বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো. শওকত আলী বলেন, আগুনের কারণ সম্পর্কে তদন্ত চলছে। চিকিৎসা সেবা চালাতে প্রয়োজনীয় সামগ্রী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে লিখিতভাবে চাইতে হবে। তিনি জানান, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা পরিচালককে কমিটি গঠন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই কমিটি অগ্নিকান্ডের কারণ উদ্ঘাটন এবং ভবিষ্যতে প্রতিকার ব্যবস্থা নির্ধারণ করবে।
হাসপাতালটি বরিশাল বিভাগের ৬ জেলাসহ কিছু আশপাশের জেলা যেমন মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ এবং বাগেরহাটের রোগীদের সেবা দিয়ে আসছে। এই হাসপাতালে কোনও ব্যাঘাত ঘটলে এলাকার সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবা বিঘিœত হবে। তাই বিভাগীয় কমিশনার জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তারা তৎপর রয়েছেন।
শেবাচিম হাসপাতালে আগুনের ঘটনায় রোগীদের সুরক্ষা এবং দ্রুত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ একযোগে কাজ করছে। হাসপাতালে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তারা প্রস্তুত রয়েছেন।
হাসপাতালের প্রশাসনিক শাখা সূত্রে জানা গেছে, পাঁচতলা ভবনটিতে মেডিসিন বিভাগের পাঁচটি ওয়ার্ডের ১০টি ইউনিট ও ডেঙ্গুগু ওয়ার্ড রয়েছে। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী ৭০ জন ডেঙ্গ রোগীসহ ৫৪৩ জন রোগী ছিল ভবনটিতে। এছাড়া রোগীদের স্বজন, নার্স, চিকিৎসক, স্টাফরাও সেখানে ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।