মেয়র খোকনের কান্না দেখে 'লজ্জা' পাইতেও ভয় পাই: ব্যারিস্টার সুমন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সোমবার ৩০শে ডিসেম্বর ২০১৯ ১০:৪৩ অপরাহ্ন
মেয়র খোকনের কান্না দেখে 'লজ্জা' পাইতেও ভয় পাই: ব্যারিস্টার সুমন

আসন্ন ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দক্ষিণের মেয়র পদে মনোনয়ন পেয়েছেন ফজলে নূর তাপস। বাদ পড়েছেন বিতর্কিত মেয়র সাঈদ খোকন। যদিও দিন দুয়েক আগে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করার সময় সাংবাদিকদের সামনে কান্নাকাটি করে আবারও মেয়র হতে চেয়েছেন ডেঙ্গু ভয়াবহতার জন্য প্রধান দায়ী এই মেয়র। তার এই কান্না দেখে অবশ্য দলের হাইকমান্ড কিংবা সাধারণ মানুষের মন গলেনি। হালের আলোচিত ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনও সাঈদ খোকনের এই কান্নাকাটির তীব্র সমালোচনা করেছেন। এটাকে তিনি চরম লজ্জাজনক হিসেবে উল্লেখ করেন।

ফেসবুক লাইভে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, 'ছুটিতে এসেছি আমেরিকায়। ভাবছিলাম, এই কয়দিন দেশের কোনো বিষয় নিয়ে কথা বলব না। কিন্তু একটা ভিডিও দেখে ঠিক থাকতে পারলাম না। দেখলাম প্রয়াত মেয়র সাহেব হানিফ সাহেবের ছেলে সাঈদ খোকন সাহেব, যিনি এখন মেয়র আছেন; দেখলাম উনি আকুতি মিনতি করে বলছেন, উনার এখন কঠিন সময় যাচ্ছে। উনি আবার সুযোগ চান মেয়র হওয়ার জন্য। এটা দেখে এত লজ্জা লাগছে যে, আর লাইভে না এসে পারলাম না।'

'আমার কাছে মনে হয়েছে কী জানেন, প্রয়াত মেয়র হানিফ সাহেবের তো অনেক সম্মান ছিল। তার ছেলেকে যদি আকুতি মিনতি করতে হয়, তাহলে আমাদের মতো সাধারণ পরিবারের মানুষের আসলে নীতি-নৈতিকতা,  এদেরকে দেখলে মনে হবে যে আমরা তো কিছুই না এদের কাছে। এই যদি হয় দেশের পরিস্থিতি অবস্থা! কিছু বলতে চাইনাই প্রথমে, এখন মনে হচ্ছে যে কিছু কথা বলা দরকার।'

'উনি হচ্ছেন সেই মেয়র সাঈদ খোকন সাহেব, যার কারণে কিছুদিন আগে ডেঙ্গুর ভয়ে মনে হইছিল ঢাকা ছেড়ে সিলেট চলে যাব। ছেলে-মেয়েদের বাইরে পাঠাইতে পারি নাই। এত দুরাবস্থা উনার আমল ছাড়া আর কখনো হয়নি। আমি ভেবেছিলাম, হানিফ সাহেবের চিন্তা করে উনি হয়তো এইটা (মেয়র পদ) ছেড়ে যাবেন। কিন্তু যখন দেখলাম ভদ্রলোক (সাঈদ খোকন) আকুতি মিনতি করতেছে আবার মেয়র হবে, তখন ভাবলাম এই দেশটায় এভাবেই আকুতি মিনতি উপরেই কি সবাই নেতা হবে?'

'এই দেশটা এইভাবে চলতে পারে না। আমি অনেক বেশি সম্মান করি হানিফ সাহেবকে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে তার সম্পর্ক, জননেত্রী শেখ হাসিনাকে বাঁচানোর ব্যাপারে তার যে কার্যক্রম- সবগুলা প্রশংসার দাবিদার। আমি মনে করি, উনার আত্মার শান্তির জন্য হইলেও এমন বিতর্কিত ব্যাপারে যাবেন না। আপনি যদি নমিনেশন না পান, পাবেন না। কিন্তু এজন্য আকুতি মিনতি করলে, আপনাদের মতো পরিবারের লোকজন আকুতি মিনতি করলে আমরা লজ্জা পাইতেও ভয় পাই।'

'আমি খুব সাধারণ পরিবার থেকে উঠে আসা। আমি মনে করি যে, আপনি যদি যোগ্য হন, যদি কাজ করে থাকেন, তবে মানুষ তো এমনিই আপনাকে নিয়ে আসবে। আপনার আকুতি মিনতি করা দেখে খুব লজ্জা লাগে। আরে আপনার তো ভাগ্য ভালো। এই ডেঙ্গুজ্বরে যারা মারা গেছে, তাদের আত্মীয়রা আপনার বিরুদ্ধে মামলা করে নাই! আপনার তো কোটি কোটি টাকা জরিমানা দিতে হতো। এই ডেঙ্গুজ্বরের কারণে এদেশে যে কী পরিমাণ মানুষ মারা গেছে, ডেঙ্গু যে আমাদের কী পরিমাণ ভয় পাওয়াইছে, এর দায় আপনি কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না।'

'শেষ বলব, পরিবারের সম্মানের কথা চিন্তা করে, প্রয়াত বাবার কথা চিন্তা করে আকুতি মিনতি করা বন্ধ করেন। যা হচ্ছে সেটা ফেস করেন। কারণ আপনি যে কর্ম করেছেন তার ফলাফল পাবেনই পাবেন।'

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব