ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর আওতাধীন গোপালপুর জোনাল শাখার সোনামুই ও নারায়ণপুর গ্রামে “ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিল” নিয়ে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ—প্রতি মাসেই তাদের প্রকৃত ইউনিট রিডিংয়ের তুলনায় ৫০ থেকে ২০০ ইউনিট পর্যন্ত বেশি বিদ্যুৎ বিল করা হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, প্রায় ৪০ জনের বেশি গ্রাহক একযোগে অভিযোগ করেছেন যে, মিটার রিডিং না দেখে অনুমানভিত্তিক বিল তৈরি করা হচ্ছে। এর ফলে অতিরিক্ত ইউনিট দেখিয়ে অধিক বিল আদায় করা হচ্ছে এবং সময়মতো বিল পরিশোধ না করায় অনেকেই জরিমানার মুখে পড়ছেন।
নারায়ণপুর গ্রামের তাওফিক আহমেদ জানান, “৮ তারিখে আমার বিল রিডিং ৬৬৩০ লেখা হয়েছে, অথচ ৩০ তারিখে মিটারে আছে ৬৫৭৫ ইউনিট। অফিসে জানালে বলে পরের মাসে সমন্বয় হবে, কিন্তু বাস্তবে কোনো সমন্বয় হয় না।”
সোনামুই গ্রামের বিধবা রহিমা বেগম বলেন, “মিটার এখন ১১০৫ দেখাচ্ছে, অথচ রিডিং লেখা হয়েছে ১২৬৫। স্বামী-সন্তান না থাকায় একা এই বিশাল বিল কিভাবে দেবো?”
এ গ্রামের সোনামুই মধ্যপাড়া জামে মসজিদের এক সদস্য বিপ্লব খান বলেন, “মসজিদের মিটারে এখন পর্যন্ত ইউনিট ১৬৮৬, অথচ ২০ দিন আগে বিল করা হয়েছে ১৭২০ ইউনিট। গ্রামের সবাই প্রায় একই সমস্যার মধ্যে পড়েছে।”
অভিযোগের বিষয়ে গোপালপুর জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. দেলোয়ার হোসাইন বলেন, “রিডিং লেখার সময় ভুল হতে পারে। কেউ অভিযোগ করলে আমরা সমাধান করি। গত ৯ দিনে ১২ থেকে ১৪টি সমস্যা ঠিক করেছি। ৭৫ হাজার গ্রাহকের মধ্যে এমন ভুল কিছু হতে পারে।”
তিনি মিটার না দেখে বিল করার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমরা ফিল্ডে লোক পাঠিয়ে রিডিং নিই। আমাদের লোকবল সীমিত, তবুও যতটা সম্ভব চেষ্টা করি ভুল না হয়।”
তবে এলাকাবাসী বলছে, এভাবে চলতে থাকলে তারা ক্ষতির শিকার হবেন। অনেকেই বলছেন, যদি এই অনিয়ম চলতেই থাকে, তাহলে তারা একত্রিত হয়ে প্রতিবাদে নামবেন। স্থানীয় প্রশাসন ও পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের প্রতি তাদের দাবি—এই অবিচার বন্ধ করে প্রকৃত রিডিংয়ের ভিত্তিতে নির্ভুল বিল নিশ্চিত করা হোক।