দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলা সাব-রেজিস্টার অফিসে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অভিযান পরিচালনা করেছে। বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী এ অভিযান চালিয়ে দুদক কর্মকর্তারা মোট ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা এবং বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রেকর্ডপত্র জব্দ করেন।
অভিযান পরিচালনা করেন দুদকের উপ-পরিচালক আতাউর রহমানের নেতৃত্বে সহকারী পরিচালক খায়রুল বাশার, সহকারী পরিচালক ইসমাইল হোসেন এবং উপ-সহকারী পরিচালক আবুল কালাম।
দুদকের উপ-পরিচালক আতাউর রহমান জানান, চিরিরবন্দর উপজেলা সাব-রেজিস্টার অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ রয়েছে, তারা দলিল সম্পাদন, জাবেদা ও নকল তোলাসহ বিভিন্ন সেবার ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত ফি’র বাইরে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে আসছেন। এমনকি জমির প্রকৃতি পরিবর্তন করে দলিল রেজিস্ট্রি করার মতো গুরুতর অনিয়মেও তারা জড়িত, যা সরকারকে রাজস্ব হারাতে বাধ্য করছে এবং সাধারণ জনগণকে হয়রানির মুখে ফেলছে।
অভিযান চলাকালে অফিসের নকল নবিশ দুলাল চন্দ্র রায়ের নিকট থেকে ২৪ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন, বিভিন্ন জনের কাজ করে তিনি এ অর্থ নিয়েছেন। অপরদিকে, অফিস সহকারী লুৎফর রহমানের কাছ থেকে ১১ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। তিনি দাবি করেন, উদ্ধারকৃত অর্থ তার ব্যক্তিগত এবং বাড়ির খরচের জন্য রাখা হয়েছিল।
এ বিষয়ে দুদক জানায়, দুলাল চন্দ্র রায়কে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করার জন্য জেলা রেজিস্ট্রারকে অবগত করা হয়েছে। লুৎফর রহমানের ব্যাপারে তদন্তসাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আতাউর রহমান আরও বলেন, "আমরা মোট ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা জব্দ করেছি এবং অফিস থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করেছি, যা তদন্তে সহায়ক হবে। এ ধরণের অনিয়ম ও দুর্নীতি রোধে দুদকের অভিযান অব্যাহত থাকবে।"
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরেই চিরিরবন্দর সাব-রেজিস্টার অফিসে ঘুষ, হয়রানি ও অনিয়মের অভিযোগ ভুক্তভোগীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। দুদকের এ অভিযান সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ও আশার সঞ্চার করেছে।
সরকারি সেবাখাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে দুর্নীতি দমন কমিশনের এমন পদক্ষেপ প্রশংসনীয় বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্ট মহল।