বিগত সরকারের প্রকল্প বাস্তবায়নে ৬ লাখ কোটি টাকার বৈদেশিক ঋণের প্রয়োজন

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ সাইফুল ইসলাম, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: সোমবার ২৫শে নভেম্বর ২০২৪ ১১:১২ পূর্বাহ্ন
বিগত সরকারের প্রকল্প বাস্তবায়নে ৬ লাখ কোটি টাকার বৈদেশিক ঋণের প্রয়োজন

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তিন মাসের বেশি সময় পার হলেও, চলতি অর্থবছরে ২৫৭টি নতুন উন্নয়ন প্রকল্পের বিষয়ে কোনো স্পষ্ট সিদ্ধান্ত আসেনি। এসব প্রকল্পে বৈদেশিক ঋণের জন্য অগ্রাধিকার নির্ধারণের লক্ষ্য ছিল পূর্ববর্তী সরকারের, কিন্তু নতুন সরকার এখনও সুনির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনা প্রদান করেনি। এর ফলে, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে ঋণের আবেদন করতে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।


পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা যায়, বর্তমান সরকারের অধীনে, এসব প্রকল্পের তালিকায় উচ্চ, মধ্যম ও নিম্ন অগ্রাধিকার পাওয়া ২৫৭টি প্রকল্পের জন্য প্রায় ৯ লাখ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব রয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ৬ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা বৈদেশিক ঋণ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব প্রকল্পের মধ্যে পরিবহণ, বিদ্যুৎ, গৃহায়ণ, কৃষি, স্বাস্থ্য এবং সামাজিক সুরক্ষা খাতের প্রকল্পগুলো অন্যতম।


ইআরডির সাবেক সচিব কাজী শফিকুল আযম জানিয়েছেন, রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর প্রকল্পগুলোর অগ্রাধিকার নির্ধারণে কিছুটা বিলম্ব হওয়াটা স্বাভাবিক। তবে, বর্তমান সরকারের উচিত দ্রুত এসব প্রকল্পের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া, যাতে বৈদেশিক অর্থায়নের জন্য উন্নয়ন সহযোগীরা আগ্রহী হয়। 


এদিকে, সোমবার (২৫ নভেম্বর) অনুষ্ঠেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এই প্রকল্পগুলোর বিষয়ে নতুন দিকনির্দেশনা আসতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এটি হবে বর্তমান সরকারের অধীনে প্রথম একনেক বৈঠক, যা আগারগাঁওয়ের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে, দুটি একনেক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল গণভবনে।


বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দ্রুত সিদ্ধান্ত না নেওয়া হলে, এসব প্রকল্পের বাস্তবায়নে তীব্র বিলম্ব হতে পারে, যা দেশের সামগ্রিক উন্নয়নকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। পরিকল্পনা কমিশনের তথ্য মতে, পরিবহণ ও যোগাযোগ খাতের ৪৮টি প্রকল্প সবচেয়ে বেশি ঋণ নির্ভর এবং এসব প্রকল্পের বাস্তবায়নে প্রায় ২ লাখ ৭৪ হাজার কোটি টাকার ঋণ প্রয়োজন। 


বিশ্বব্যাংক, এডিবি, আইডিবি, জাইকা, চীন, ভারত এবং রাশিয়াসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে এসব ঋণ আনার জন্য যথাযথ দিকনির্দেশনার প্রয়োজন বলে বিশেষজ্ঞরা জানান। 


সরকারের পক্ষ থেকে এডিপি বাস্তবায়নের জন্য যে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, তাতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার গুরুত্ব বাড়ছে। আগামী একনেক বৈঠকে এসব প্রকল্পের অগ্রাধিকার নির্ধারণ ও ঋণ চাওয়ার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসতে পারে, যা দেশের উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে আরও গতিশীল করবে।