হিলি বন্দর দিয়ে ৭২ ট্রাকে ভারত থেকে এলো ১৬'শ ৩৩ টন পেঁয়াজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
গোলাম রব্বানী, উপজেলা প্রতিনিধি হিলি (দিনাজপুর)
প্রকাশিত: শুক্রবার ৯ই জুন ২০২৩ ০৭:১৮ অপরাহ্ন
হিলি বন্দর দিয়ে ৭২ ট্রাকে ভারত থেকে এলো ১৬'শ ৩৩ টন পেঁয়াজ

দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম এর উর্ধগতি ঠেকাতে সরকার ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির (আইপি) অনুমতি দেওয়ায় দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে চার দিনে ৭২ ট্রাকে ১৬'শ ৩৩ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। অন্য দিকে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি হওয়ায় বাজারে দেশী পেঁয়াজের দাম কমেছে কেজিতে ২০-২৫ টাকা। আমদানি অব্যাহত থাকলে পেঁয়াজের দাম অর্ধেকে নেমে আসবে বলে জানান আমদানি কারকরা। 


শুক্রবার (৯ জুন) সাপ্তাহিক ছুটির দিন সকালে হিলি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। বাজারে দেশী পেঁয়াজ পাশাপাশি ভারতীয় পেঁয়াজ  সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দাম কমেছে দেশী পেঁয়াজের। ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির আগে দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৮০-৮৫ টাকা। গত ৫ জুন ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হওয়ায় আজ দেশীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫৮-৬০ টাকা। আর ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি ৩৬-৩৮ টাকা। 


হিলি কাস্টমস এর তথ্য মতে, সরকার ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়ার প্রথম দিন গত সোমবার ৫ জুন তিনটি ট্রাকে ৬০ মেঃ টন, দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার ৪২ ট্রাকে ৮৮৯ মেঃ টন ও তৃতীয় দিন বুধবার ১৩ ট্রাকে ২'শ ৬০ মেঃ টন, চতুর্থ দিন ১৪ ট্রাকে ৪২৪ মেঃ টন পেঁয়াজ  আমদানি হয়েছে।


হিলি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি হওয়ায় বাজারে দেশীয় পেঁয়াজের দাম কমেছে। গত শুক্রবার দেশীয় পেঁয়াজ কিনেছি ৮৫ টাকা কেজি। আজ সেই পেঁয়াজ কিনলাম ৬০ টাকা কেজি। আর ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৬-৩৮ টাকা কেজি। কোরবানি ঈদের পেঁয়াজের দাম কমে যাওয়ায় আমাদের জন্য খুব ভালো হয়েছে। কারণ এই ঈদে পেঁয়াজ সব পরিবারেই বেশি লাগে।


হিলি বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা মইনুল হোসেন ও ফেরদৌস রহমান বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির ফলে চার দিনের ব্যবধানে বাজারে দেশীয় পেঁয়াজের দাম কমেছে কেজিতে ২০-২৫ টাকা। চার দিন আগে দেশীয় পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি করেছি ৮০-৮৫ টাকা কেজি আজ শুক্রবার সেই পেঁয়াজ বিক্রি করছি ৬০ টাকা কেজি। অন্য দিকে ভারতীয় এলসি পেঁয়াজ বিক্রি করছি প্রতি কেজি ৩৬-৩৮ টাকা। পেঁয়াজের দাম যখন বেশি ছিলো বেচা বিক্রি তখন বেশি ছিলো। বর্তমানে পেঁয়াজের দাম কমেছে সাথে বেচা বিক্রিও কমেছে। ঈদের আগে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা নেই তাই বেশি দামে দেশী পেঁয়াজ কিনে ধরা খাওয়া।  এতে সাধারণ ক্রেতাদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে এবং আমাদের বেচা বিক্রি বেড়েছে।


হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক সেলিম উদ্দীন বলেন, ‘বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দাম কমেছে। প্রকার ভেদে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৩ টাকা কেজি দরে। আমদানি অব্যাহত থাকলে আরও দাম কমে যাবে। আশা করছি, কোরবানির ঈদের আগে ৩০ টাকার মধ্যে চলে আসবে।


বন্দরের আরেক পেঁয়াজ আমদানিকারক শহীদুল ইসলাম বলেন, সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানোর কারণেই দেশি পেঁয়াজের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছিল। ফলে সাধারণ ক্রেতাদের বেশি দামে পেঁয়াজ কিনতে হয়েছে। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকায় তারা এই সুযোগ নিয়েছিল। ভারত পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত থাকলে বাজারে পেঁয়াজের দাম অর্ধেকে নেমে আসবে বলে আশা করছি। 


হিলি বন্দরের পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন প্রতাপ বলেন, গত সোমবার ৫ জুন থেকে বৃহস্পতিবার ৮ জুন পর্যন্ত হিলি বন্দর দিয়ে চার দিনে ভারত থেকে ৭২ ট্রাকে ১৬'শ ৩৩ মেঃ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। হিলি স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপসহকারী কর্মকর্তা ইউসুফ আলী বলেন, হিলি বন্দরের ১৪ জন আমদানিকারক ৩০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি পেয়েছে। আমদানি কারকরা হলেন, সততা বাণিজ্যলয় ,রায়হান ট্রেডাস, এন আলম ট্রের্ডাস, সালাম ট্রের্ডাস, সালেহা ট্রের্ডাস, বিকে ট্রের্ডাস, বিএস ট্রেডিংসহ ১৪ জন আমদানিকারক।