মার্কিন ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ১০ই মে ২০২২ ০৪:১১ অপরাহ্ন
মার্কিন ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

 সর্বোত্তম ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ ও নীতির কথা তুলে ধরে মার্কিন ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।মঙ্গলবার (১০ মে) সকালে গণভবনে বাংলাদেশে সফররত ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের এক্সিকিউটিভ বিজনেস ডেলিগেশনের সঙ্গে বৈঠককালে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।


শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এখন একটি আকর্ষণীয় বিনিয়োগ গন্তব্য। এখানে ভৌত অবকাঠামোর পাশাপাশি বিনিয়োগ ও ব্যবসা সংক্রান্ত নিয়ম-কানুন উন্নত এবং সহজ হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের সবচেয়ে উদার বিনিয়োগ নীতি রয়েছে এবং বিদেশি বিনিয়োগ সংসদের আইন এবং দ্বিপাক্ষিক চুক্তি দ্বারা সুরক্ষিত।


মার্কিন ব্যবসায়ীদের আশ্বাস দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন আমাদের ব্যবসা এবং বিনিয়োগের পরিবেশ সহজ করার জন্য সর্বোত্তম সম্ভাব্য নীতি কাঠামো এবং জোরালো সম্ভাবনার বিষয়ে আপনাদের আশ্বস্ত করছি।


শেখ হাসিনা জানান, তিনি বিশ্বাস করেন মার্কিন কোম্পানিগুলো এ সুবিধা গ্রহণ করবে এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, আইসিটি, অবকাঠামো, হালকা প্রকৌশল পণ্য, মোবাইল ফোন ও ইলেকট্রনিক পণ্য, অটোমোবাইল, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ, ওষুধ, সিরামিকের মতো সম্ভাব্য খাতে আরও বিনিয়োগ করবে।তিনি বলেন, আমি নিশ্চিত যে আপনারা অনুকূল পরিবেশ বুঝতে সক্ষম হবেন এবং বাংলাদেশে সম্ভাব্য বিনিয়োগে আস্থা অনুভব করবেন।


বিশ্ববাজারে বাংলাদেশি পণ্যের চাহিদার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন আরএমজি, চামড়া, প্লাস্টিক, পাট, আইসিটি, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ এবং আরও অনেক খাতে অত্যাধুনিক উৎপাদন কারখানার জন্য স্বীকৃত।সম্প্রতি বাংলাদেশের শতভাগ এলাকায় বিদ্যুতায়ন, কিছু মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে সড়ক, রেলপথ ও নৌ যোগাযোগের উন্নয়ন করার কথা উল্লেখ করেন সরকার প্রধান।


এছাড়াও সারাদেশে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য ১শ’টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আপনারা যদি চান তবে আমরা শুধুমাত্র মার্কিন বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি জোন নির্ধারণ করে দিতে পারি।দক্ষ জনশক্তি প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, এখানে বিনিয়োগকারীরা প্রতিযোগিতামূলক মজুরিতে দক্ষ মানবসম্পদ পাবে।


২০২১ সালের সেপ্টেম্বর চালু হওয়া ইউএস-বাংলাদেশ এনার্জি টাস্কফোর্স উভয় দেশের স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে জ্বালানি সহযোগিতাকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।প্রস্তাবিত ইউএস-বাংলাদেশ ডিজিটাল ইকোনমি টাস্কফোর্স টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে উভয় দেশের কোম্পানির সহযোগিতাকে আরও জোরদার করতে অবদান রাখবে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।


বাংলাদেশ-মার্কিন বন্ধুত্ব অভিন্ন মূল্যবোধ ও অংশীদারিত্বমূলক স্বার্থের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, এটি আমাদের সম্প্রসারিত সার্বিক ব্যবসায়িক সম্পর্কের মধ্যে প্রতিফলিত হয়েছে।


মার্কিন বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার এবং অন্যান্য বাণিজ্য সুবিধার মাধ্যমে দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্ক আরও জোরদার করার সম্ভবনার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ একটি উপযুক্ত সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু করতে প্রস্তুত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য এফডিআই এবং রপ্তানি বাজারের একক বৃহত্তম উৎস।


ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের বোর্ড চেয়ার জে আর প্রাইর, ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের বোর্ড সদস্য এবং বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিজনেস এক্সিকিউটিভরা সভায় বক্তব্য রাখেন।এতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত উন্নয়ন বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, অ্যাম্বাসেডার অ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।