সরাইলে বিএনপির নতুন কমিটিতে মাঠ গরম!

নিজস্ব প্রতিবেদক
মো: তাসলিম উদ্দিন, উপজেলা প্রতিনিধি সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
প্রকাশিত: শুক্রবার ৫ই মার্চ ২০২১ ০১:৫৮ অপরাহ্ন
সরাইলে বিএনপির নতুন কমিটিতে মাঠ গরম!

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সদ্য ঘোষিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলা আহবায়ক কমিটি নিয়ে বিতর্ক থাকলেও তৃণমূল নেতারা প্রাণ ফিরে পেয়েছে।


দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বলেছেন, নতুন কমিটিতে নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে কমিটি দেওয়া হয়েছে এই কমিটিতে উপজেলার বিএনপি ত্যাগী নেতাদেরকে মূল্যায়ন করা হয়েছে  আবার অনেকে বলছেন কমিটিতে অনেক ত্যাগী নেতাকর্মীর নাম নেই। অনেকে আবার বলেছেন এই কমিটির বিষয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি।


জেলা বিএনপির আহবায়ক মোঃ জিল্লুর রহমান। স্বাক্ষরিত কমিটিতে সরাইল উপজেলা বি এনপি আহবায়ক মোঃ আনিছুল ইসলাম ঠাকুর ওএ্যাডঃ নুরুজ্জামান লস্কর তপু'কে সদস্য সচিব করে কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেক নেতাকর্মী।


গত (২৬ ফেব্রুয়ারি) সরাইল উপজেলা বিএনপির মো. আনিছুল ইসলাম ঠাকুর'কে আহবায়ক ও এ্যাডঃ নুরুজ্জামান লস্কর তপু'কে সদস্য সচিব করে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষনা করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপি। সরাইলে বিএনপির রাজনীতি মাঠ গরম করে চলেছে বিএনপি নেতাকর্মীরা    ঘোষিত সদ্য কমিটির বৈধতা নিয়ে।


সরাইল বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগসহ সাধারণ নেতা কর্মীদের মাঝে  প্রাণের সঞ্চালন ফিরে এসেছে তারা মিষ্টি বিতরণ মধ্যে দিয়ে উৎসাহের মত পালন করেছে মোড়ে মোড়ে নেতাকর্মীরা।


সরাইল উপজেলার বিএনপির নব-গঠিত আহবায়ক কমিটিকে অবৈধ দাবি করে গত সোমবার সরাইলে বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভা করেছে উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সদ্য ঘোষিত আহবায়ক কমিটির সদস্য মোঃ আনোয়ার হোসেন ও সাবেক সহ-সভাপতি আহবায়ক কমিটির সদস্য মোঃ আক্তার হোসেনের নেতৃত্বে সোমবার সকাল ১০টার দিকে বিএনপির বিক্ষুব্দ নেতা-কর্মীরা সরাইল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে সরাইল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আলোচনা সভায় মিলিত হয়।


এই নিয়ে কয়েকদিন ধরে চলছে সরাইল উপজেলা বিএনপিতে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। পরের দিন আহবায়ক কমিটির আনন্দ মিছিল হুয়ার কতা থাকলেও দুই গ্রুপের  মধ্যে সংঘাত এড়াতে  সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই কর্মসূচি বন্ধ রাখার ব্যবস্থা করেছেন উপজেলা প্রশাসন সুত্রে জানাযায়, সরেজমিনে বি এন পি নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিন পরে হলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সরাইল উপজেলা বিএনপির একটি সুন্দর কমিটি উপহার দিয়েছে।


এই কমিটির মাধ্যমে উপজেলা বিএনপি'র একাত্ম আধিপত্যের  অপরাজনীতি  অবসান হলো।নেতারা বলছেন এই কমিটিকে নিয়ে যারা আলোচনা করছে তারা দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতিতে আধিপত্য সৃষ্টি করে রেখেছিল।


এ আধিপত্যের অবসান হল সদ্য কমিটির  ঘোষণার মাধ্যমে।কমিটি ঠিক আছে তবে এক- দুজন নিয়ে আলোচনা আছে। কমিটি মন মত হতো,যদি তাদের নাম দেওয়া হলে। তবে কমিটি নিয়ে জল্পনা কল্পনার মাধ্যমে তৃণমূলের চলছে মিষ্টি খাওয়া মিষ্টি বিতরণ ফুল দিয়ে বরণ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নতুন কমিটি নিয়ে অনেক নেতা বলেছেন, বর্তমানে দলের যে অবস্থা এখন পদ-পদবি নিয়ে মাঠে ময়দান গরম করে  মিটিং মিছিল করে দলের দুর্নাম করা ছাড়া আর কিছু নয়।


জেলা কমিটির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে যেভাবে একটা কমিটি দিয়েছে অনেকে আসছে অনেক আসতে পারে নাই। এখন সকলকে নিয়ে দলের স্বার্থে  সুসংগঠিত হয়ে কাজ করা  দলের জন্য  এখন অপরিহার্য।তা না করে কে কোন দলের নেতার সাথে কার কি সম্পর্ক এই নিয়ে শুধু সারাদিনই হট্টগোল। তারা আরোও বলেন, আমরা জানি সরাইলে কে রাতে-দিনে কার সাথে মিটিং করে। তবে আমরা সকলকে অনুরোধ করবো দলের স্বার্থে সকলেই একসাথে কাজ করতে হবে কাদা ছোড়াছুড়ি ছেড়ে।

সরাইল উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এ্যাডঃ আব্দুর রহমান এ প্রতিনিধিকে বলেন, সরাইল বিএনপির সদ্য ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আমাকে রাখা হয়েছে। তবে এই কমিটি জেলা বিএনপি দিয়েছে এর ভালো মন্দ এরা জানে।সরাইল উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আহবায়ক কমিটি সদস্য মো. আনোয়ার হোসেন আহবায়ক কমিটির প্রতিক্রিয়ায় এ প্রতিনিধি কে তিনি বলেন।


দীর্ঘদিন আন্দোলন সংগ্রামে যারা মাঠে ছিল না তাদেরকে দিয়ে কমিটি করা হয়েছে।এ কমিটিতে দু-চারজন হবে যারা দলের  দুর্দিনে দলের পাশে থেকে আন্দোলন সংগ্রামে আমাদের সাথে মাঠে কাজ করেছে। এ সময় তিনি বলেন, সদ্য কমিটি অবৈধ এবং এর মধ্যে অনেকেই দল থেকে বহিস্কৃত  নেতা রয়েছেন।


সরাইল উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ- সভাপতি ও বতর্মান কমিটির সদস্য মো. আক্তার হোসেন নতুন কমিটির বিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় জানান, খেয়াল খুশিমত এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে গঠনতন্ত্র অনুসরণ করা হয়নি। এর ফলে বিএনপির যোগ্য নেতাকর্মী বাদ পড়েছে। আমি জেলা বিএনপির সদস্য আমাকে কোনো কিছু  না বলে সরাইল উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি দিয়েছে।


ঘোষিত কমিটিতে আমাকে সদস্য করা হয়ে বলে তিনি বলেন, নেতা কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে এবং আরো আন্দোলন করবে।আমি মনেকরি এটা দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক হয়নি। আলোচিত উপজেলা বিএনপির সদ্য আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব এ্যাডঃ নুরুজ্জামান লস্কর তপুবলেন, ৩১ সদস্য বিশিষ্ট স্বল্প পরিসরে কমিটি গঠন করায় অনেক নেতাকর্মী বাদ পড়তে পারেন। এ নিয়ে কিছু ভুল বুঝাবুঝি থাকতে পারে। তবে অচিরেই  অবসান ঘটবে। তবে আমরা সবাইকে নিয়ে সরাইলে সুসংগঠিত বিএনপি গড়ে তুলতে চাই।


সরাইল বিএনপি'র প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি ও নতুন ঘোষিত উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মোঃ আনিছুল ইসলাম ঠাকুর বলেন, জাতীয়তাবাদী বিএনপি একটি বৃহৎ দল।সরাইল উপজেলা বিএনপি'র আহবায়ক কমিটি ৩১ সদস্য বিশিষ্ট  ঘোষণা করা হয়েছে। অনেকের নাম নাও আসতে পারে। তানি বলেন, তবে পূর্ণাঙ্গ কমিটির সবাইকে নিয়েই করা হবে।এ  নিয়ে অনেকের মান অভিমান

রাগ থাকতে পারে এক সময় রাগ থাকবে না। তবে দলের স্বার্থে আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে।এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির আহবায়ক মোঃ জিল্লুর রহমান সাথে কথা হলে তিনি বলেন, চুলচেরা বিশ্লেষণ করে দলকে সংগঠিত করতে স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে কথা বলে নবীন প্রবীণের সমন্বয়ে ৩১ জনের কমিটি দিয়েছি।


অনেকেই কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন। তারা ক্ষুদ্ধ হতেই পারেন তবে এ আহবায়ক কমিটি। পূর্ণাঙ্গ কমিটি হলে সকলকে মূল্যায়ন করা হবে। তিনি আরো বলেন, আমরা সুন্দর কমিটি সরাইল বিএনপিকে উপহার দিতে পেরেছি।