বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে চাঁদা চেয়ে চিঠি, অস্বীকার সমন্বয়কদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার ১৭ই আগস্ট ২০২৪ ০৯:৩২ অপরাহ্ন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে চাঁদা চেয়ে চিঠি, অস্বীকার সমন্বয়কদের

ছাত্র আন্দোলনে হতাহতদের জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জে চাঁদা তোলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরিচয় দিয়ে এ চাঁদা তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন কয়েকজন। যদিও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা বলছেন, চাঁদা তোলার সঙ্গে তাদের কেউ জড়িত নয়। এরইমধ্যে তারা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করেছেন।


শুক্রবার সদর উপজেলার বেশ কয়েকটি মসজিদে ছাত্র আন্দোলনের নিহত শিক্ষার্থীদের পরিবারকে সহায়তা দেওয়া ও আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার কথা বলে চাঁদা তোলা হয়। বারঘোরিয়া ও বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি মসজিদ থেকে চাঁদা তোলার খবর পাওয়া গেছে। জুম্মার নামাজের আগেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে একটি পত্র পাঠানো হয় মসজিদে। নামাজের পর মসজিদের ইমামরা ওই চিঠি পড়ে শোনান মুসল্লিদের। 


এমন একটি চিঠি ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের হাতে এসেছে। সেখানে লেখা রয়েছে, ‘সংগ্রামী এলাকাবাসী আসসালামু আলাইকুম। আপনারা অবগত আছেন যে, ১৬/০৭/২৪ হতে ৫/৮/২৪ ইং তারিখ পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-নাগরিক গণঅভ্যুত্থানে অনেক ভাই শাহাদত বরণ করেছেন। অনেকেই আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এই সকল শহীদ ও আহত পরিবারকে সাহায্য সহযোগিতা করার জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে আপনাদের বিশেষভাবে অনুরোধ করছি। শহীদ ও আহতদেরকে আপনার সামর্থ অনুযায়ী সাহায্য করুন। ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে মসজিদের বাইরে লোক দাঁড়িয়ে থাকবে আপনারা তাদের হাতে সাহায্য পাঠাবেন। অনুরোধক্রমে- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।’


এদিকে চাঁদা তোলার খবর পাওয়া গেছে, বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের শিমুলতলা জামে মসজিদ, যাদুপুর কেন্দ্রীয় জামে মসহিদ, শিমুলতলা বালুচর জামে মসজিদ থেকে। এছাড়াও বারঘোরিয়া ইউনিয়নেরও একাধিক মসজিদ থেকে চাঁদা তোলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।


সদর উপজেলার শিমুলতলা-মিঞাপাড়া জামে মসজিদের বাইরে অর্থ সংগ্রহ করছিলেন মোহা. রাজু নামে এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, কিছু লোক তাকে বলেছিল মসজিদে চিঠি দেওয়া আছে। বাইরে দাঁড়িয়ে টাকা তুলতে হবে। তাই আমি তুলেছিলাম। আগামী মঙ্গলবার তারা এসে টাকা নিয়ে যাবে। আমি না বুঝেই তাদের কথা মতো মসজিদের বাইরে দাঁড়িয়ে টাকা তুলেছি।’ যারা তাকে টাকা তুলতে বলেছিলেন তাদের পরিচয় জানাতে পারেন নি মোহা. রাজু। 

 

চাঁদা তোলার ব্যাপারে বিভিন্নভাবে অবগত হয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা। এরইমধ্যে সমন্বয়করা বিবৃতি দিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। সমন্বয়কদের একজন আব্দুর রাহিম বলেন, ‘বিষয়টি আমাদেরকেও বিব্রত করছে। কারা এটার সঙ্গে জড়িত তা অনুসন্ধান করে দেখছি। তবে আমাদের কেউ জড়িত নয়।’ 


তিনি জানান, বিভিন্ন এলাকা থেকে চাঁদা তোলার খবর পেয়ে বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।


এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার ওসি এস এম জাকারিয়া জানান, শিক্ষার্থীরা থানায় এসে মৌখিক অভিযোগ করেছেন। সদর উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকার নাম উল্লেখ করে সেখান থেকে চাঁদা তোলা হয়েছে বলে জানানো হয় পুলিশকে। কিন্তু তারা কারো নাম-পরিচয় উল্লেখ করতে পারে নি। 


ওসি আরও বলেন, ‘ছাত্রদের পরামর্শ দিয়েছি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে প্রচারণা চালাতে। পাশাপাশি পুলিশও তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে।’


সূত্র: ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন