বড়াইগ্রামে ঋণের চাপে ব্যবসায়ীর আত্মহত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক
সুজন কুমার
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ৪ঠা আগস্ট ২০২২ ০৫:৩০ অপরাহ্ন
বড়াইগ্রামে ঋণের চাপে ব্যবসায়ীর আত্মহত্যা

নাটোরের বড়াইগ্রামে ঋণের চাপে নিজের গলাকেটে ও হারপিক পান করে শরীফুল ইসলাম সোহেল (৩৫) নামে এক ব্যবসায়ী আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার বনপাড়া পৌরসভার কালিকাপুর নতুনবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।সোহেল নতুনবাজার এলাকার গাজী আহমুদুল্লার ছেলে। তিনি বনপাড়া বাজারে মোবাইল ফোনের ব্যবসা করতেন।


বড়াইগ্রাম থানার ওসি আবু সিদ্দিক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সকাল ১০টার দিকে সোহেলের মা টিউবয়েল থেকে পানি নিতে বের হয় এবং বাবা বাজারে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যান। এসময় সোহেল নিজ বাড়ির দোতলায় মায়ের ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেন। পরে তার মা বাইরে থেকে গোঙানোর শব্দ শুনে প্রতিবেশিদের ডাকেন। পরে তারা এসে দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে সোহেলকে মেঝেতে পড়ে গোঙাতে এবং বিছানার উপর বটি ও পাশে একটি হারপিকের বোতল পড়ে  থাকতে দেখেন। পরে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় আমিনা হাসপাতাল পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে সোহেলের মৃত্যু হয়।


ওসি আরও জানান, বাবা-মায়ের সাথে একই বাড়িতে থাকলেও সোহেল আলাদাভাবে সংসার চালাতেন। একসময় পারিবারিক কলহের জের ধরে নিজবাড়ি ছেড়ে পাশ্ববর্তী মোবারকের বাসায় ভাড়াও উঠেছিলেন। ১৫দিন আগে আবার নিজবাড়িতে ফিরে আসেন।সোহেলের বাবা গাজী আহমদুল্লাহ জানান, তার এক ছেলে তিন মেয়ে। সবাই বিবাহিত। সোহেলের সংসারে দুই ছেলে এক মেয়ে রয়েছে। ছেলের মোবাইলের ব্যবসা আর তার হারবাল ওষুধের দোকান আছে।


সোহেলের বাবা আরও জানান, ছেলে আলাদাভাবে সংসার চালাতো। মাঝে রাগারাগি করে ভাড়া বাসায় উঠেছিল। আবার নিজ বাড়িতে ফিরে এসে সোহেল জানায় তার ৩০ লাখ টাকা ঋণ হয়েগেছে। ঋণ পরিশোধের জন্য পাওনাদাররা চাপ দিচ্ছে। ছেলের ঋণ পরিশোধের জন্য তিনি জমিও বিক্রি করতে চেয়েছিলেন। তার ধারণা, ঋণের চাপে সোহেল আত্মহত্যা করেছে।  


বনপাড়া পৌর মেয়র কেএম জাকির হোসেন বলেন,সোহেলের ৭ম ও ৫ম শ্রেণিতে পড়ুয়া দুই ছেলে এবং ৩ বছর বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে। ঠিক কেন এমন হলো বোঝা যাচ্ছে না।অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ আল রাজীব ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বলেন, আপত দৃষ্টিতে এটাকে আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে। তবু সিআইডির ফরেনসিক ইউনিটকে ডাকা হয়েছে। তারা গলাকাটার কাজে ব্যবহৃত বটি ও অন্যান্য আলাম সংগ্রহ করে রিপোর্ট দেবেন। লাশের ময়না তদন্ত চলছে। রিপোর্ট হাতে পেলে সোহেলের মৃত্যুর কারণ নিয়ে মন্তব্য করা যাবে।