ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় বালুবাহী জাহাজের ধাক্কায় লইসকা বিলে যাত্রীবোঝাই নৌকা ডুবির ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে জনতা। পরে পুলিশে খবর দিলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এদিকে প্রশাসনের নির্দেশনায় সবধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। শনিবার (২৮ আগস্ট) সকালে উপজেলা প্রশাসন এ নির্দেশনা জারি করে।
আটককৃতরা হলেন, জেলার সরাইল উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের ষোলাবাড়ি এলাকার আবজল মিয়ার ছেলে জামির মিয়া (৩৫), কাশেম মিয়ার ছেলে মো. খোকন (২২) ও মৃত আব্দুল করিমের ছেলে মো. রাসেল (১৮)। এদের মধ্যে জামির বালুবোঝাই ট্রলারের চালক। বাকি দুজন তার সহযোগী। হ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোজাম্মেল হোসেন রেজা জানান, ঘটনার পর পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় জনতা আটক করে আমাদের খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) রাবেয়া আফসার জানান, ট্রলারডুবির ঘটনায় সাময়িক সময়ের জন্য বিজয়নগর থেকে সবধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় পরবর্তীতে নৌযান চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
অপরদিকে যাত্রীবাহী নৌকাডুবির ঘটনায় এ পর্যন্ত ২১ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৬ জনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শুক্রবার বিকাল সোয়া ৫টার দিকে উপজেলার লইসকা বিলে এ ঘটনা ঘটে। প্রায় ৭০ জন যাত্রী নিয়ে নৌকাটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এ ঘটনায় রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ২১ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
যাদের লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে তারা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের পৈরতলা এলাকার আবু সাঈদের স্ত্রী মোমেনা বেগম (৫৫) ও ফারুক মিয়ার স্ত্রী কাজল বেগম (৪০), দাতিয়ারা এলাকার মোবারক মিয়ার মেয়ে তাসফিয়া মিম (১২), সদর উপজেলার সাদেরকপুর গ্রামের মুরাদ হোসেনের ছেলে তানভীর (৮), চিলোকুট গ্রামের আব্দুল্লাহ মিয়ার শিশু কন্যা তাকুয়া (৮), নরসিংসার গ্রামের জামাল মিয়ার ছেলে সাজিম (৭), ভাটপাড়া গ্রামের ঝারু মিয়ার মেয়ে শারমিন (১৮), বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর ইউনিয়নের ফতেহপুর গ্রামের জহিরুল হকের ছেলে আরিফ বিল্লাহ (২০), বেড়াগাঁও গ্রামের মৃত মালু মিয়ার স্ত্রী মঞ্জু বেগম (৬০), জজ মিয়ার স্ত্রী ফরিদা বেগম (৪৭) ও তার মেয়ে মুন্নি (১০), আব্দুল হাসিমের স্ত্রী কমলা বেগম (৫২), নূরপুর গ্রামের মৃত রাজ্জাক মিয়ার স্ত্রী মিনারা বেগম (৫০), আদমপুর গ্রামের অখিল বিশ্বাসের স্ত্রী অঞ্জনী বিশ্বাস (৩০), পরিমল বিশ্বাসের মেয়ে তিথিবা বিশ্বাস (২) এবং ময়মনসিংহের খোকন মিয়ার স্ত্রী ঝর্ণা বেগম (৪৫)।
রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল থেকে ১৬ জনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত উদ দৌলা খান জানান, লাশের সঙ্গে দাফনের জন্য স্বজনদের হাতে ২০ হাজার টাকা অর্থ সহায়তা তুলে দেওয়া হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।